চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপসিকের তৈরি ‘ডিপসিক এআই’ মডেল গত জানুয়ারি মাসে উন্মুক্তের পরপরই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে। এবার চীনে তৈরি নতুন এআই এজেন্ট ‘মানুস’ নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সম্প্রতি মনিকা নামের একটি স্টার্টআপ পরীক্ষামূলকভাবে এআই এজেন্টটি উন্মুক্ত করেছে। এআই এজেন্টটি স্বাধীনভাবে চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হওয়ায় এরই মধ্যে প্রযুক্তিবিশ্বে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকে হুমকির মুখে ফেলছে চীন।

জানা গেছে, মানুস নামের এআই এজেন্টটি বাস্তব যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। শুধু তা–ই নয়, এআই এজেন্টটি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি সহজেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। এরই মধ্যে অনলাইনে এআই এজেন্টটির একাধিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশের পরপরই ভিডিওগুলো প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাজে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের দাবি, মানুস বিশ্বের প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এজেন্ট। কারণ, এটি বিভিন্ন বিষয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা ও পরিকল্পনা করতে পারে। পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ ফলাফলও সরবরাহ করে থাকে। ফলে এআই এজন্টটির মাধ্যমে সহজেই ভ্রমণের পরিকল্পনা প্রণয়ন, শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ, শিক্ষকদের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ শিক্ষাক্রম তৈরি এবং বিভিন্ন বিমা নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা সম্ভব।

ম্যানাস এআই এজেন্টের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মনিকা জানিয়েছে, মানুস এআই এজেন্ট বিভিন্ন জটিল কাজ করতে পারে। ব্যবহারকারীর পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেকে ক্রমাগত উন্নত করতে সক্ষম এআই এজেন্টটি এরই মধ্যে জিআইএআইএ বেঞ্চমার্কে ওপেনএআইয়ের ডিপরিসার্চের তুলনায় ভালো ফলাফল প্রদর্শন করেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা

তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হরমুজ প্রণালি দিয়ে কোনো জাহাজ চলতে পারবে না। এরই মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়ে গেছে।

এই ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরও জোরদার করবে এবং হরমুজ প্রণালিকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করবে, যা বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।

হরমুজ প্রণালি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল একটি সমুদ্রপথ। এটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত।

প্রণালিটির প্রস্থ খুব বেশি নয়, সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় মাত্র ৩৯ কিলোমিটার, যার মধ্যে কেবল দুটি সংকীর্ণ চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে। তবে ছোট এই পানিপথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের মোট সমুদ্রপথে পরিবাহিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে, যা একে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

হরমুজ প্রণালি দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ইরান প্রায়ই এই প্রণালিকে একটি কৌশলগত চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে, তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে, যা গোটা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বারবার এই প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।

ইরানে হামলার পরপরই হরমুজ প্রণালি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। খবর আলজাজিরার।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা