চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থিত কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে হঠাৎ ছাই ও কালো ধোঁয়া বের হয়ে চারপাশ ঢেকে দেয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ বিকেলে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এভাবে ধোঁয়া নির্গত হতে দেখে অনেকে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে ধোঁয়া কমে গেলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, আজ বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে ফ্লাই অ্যাশ সরবরাহ করার সময় অ্যাশ সাইলোর একটি পরিদর্শন দরজা খুলে যায়। ওই সময় কিছু ছাই বাইরে বের হয়ে পড়ে। কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক না থাকায় এতে জনস্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয়নি। ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে ছাই নির্গমন দরজা বন্ধ করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমও চালু থাকে।

বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রাজু ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা সম্পর্কে কোনো ধরনের তথ্য না আসায় সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

জানতে চাইলে এস এস পাওয়ার ওয়ান লিমিটেডের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফয়জুর রহমান বলেন, অ্যাশ সাইলোর একটি পরিদর্শন দরজা খুলে যাওয়ায় কিছু ছাই বাইরে বের হয়ে পড়ে। ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭০ শতাংশের মালিকানা এস আলম গ্রুপের, বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানা সেপকো ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন ও এইচটিজি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের হাতে রয়েছে। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট দেশের প্রথম বেসরকারি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ