নড়াচড়া করছে না, তাকে আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি
Published: 11th, March 2025 GMT
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার তিন আসামির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার মাগুরা কারাগার থেকে তিনজনকে ঢাকার মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য ফরেনসিক বিভাগ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
আসামিরা হলো শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, স্বামী সজিব শেখ ও ভাশুর রাতুল শেখ।
এদিকে ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার মাগুরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্র-জনতা। দুপুরে স্থানীয় সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে একটি মিছিল বের হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এ সময় বক্তারা বলেন অবিলম্বে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার তদন্ত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে। দেশের সব ধর্ষণের বিচারকার্য শেষ করতে হবে, সেই সঙ্গে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, এমন একটা দেশে বাস করছি যেখানে ধর্ষকের নিরাপত্তার জন্য কোর্ট বসানো হয়। যদি সুষ্ঠু একটা বিচার দেওয়া হতো, তাহলে ভবিষ্যতে ধর্ষক আর এমন কোনো কাজ করতে পারবে না।
এদিকে শিশুটি ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছে। শিশুর মা সমকালকে বলেন, মেয়ের অবস্থা ভালো না। আজও সে নড়াচড়া করছে না। তাকে আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। সবার কাছে দোয়া চাই। ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন তিনি।
গত রোববার রাতে আদালত বসিয়ে চার আসামি হিটু শেখ, তার স্ত্রী জাবেদা বেগম এবং তাদের দুই ছেলে সজিব শেখ ও রাতুল শেখের রিমান্ড শুনানি করা হয়। শুনানি শেষে হিটুর সাত দিন ও অপর তিনজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ভোরে হিটু ও তার দুই ছেলেকে পুলিশ কারাগার থেকে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
ফরেনসিক বিভাগ তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। ভুক্তভোগী শিশুর শরীর থেকে সংগৃহীত আলামতের সঙ্গে আসামিদের এই নমুনা ডিএনএ পরীক্ষার পর ম্যাচিং করে কিনা, তা জানার জন্যই এ প্রক্রিয়া। সন্ধ্যায় তিন আসামিকে মাগুরা কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিএসএফ
বাংলায় কথা বললেই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের বাংলাদেশে জোর করে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিএসএফ ও দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার। আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে সীমান্ত সুরক্ষা ও পুশ ব্যাক বিষয়ে বিধায়কদের আনা প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বাসিন্দা মেহবুব শেখকে (৩৬) ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বিএসএফের উত্তরবঙ্গের শাখা। ওই ব্যক্তি মহারাষ্ট্রের ঠাণেতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গত ১১ জুন তাকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
মেহবুবের ভাই মুজিবুর রহমান জানান, তার বড় ভাইকে গত শুক্রবার ভোর রাতে শিলিগুড়ির বিএসএফ বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করেছে। তিনি আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্যদের সভাপতি সামিরুল ইসলাম ওই শ্রমিকের দুর্দশার বিষয়টি জানার পর মহারাষ্ট্র পুলিশের যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠান। তার মধ্যে মেহবুবের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত বিবরণ ও পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট রয়েছে। তবে মহারাষ্ট্র পুলিশ ওই সব নথিপত্রকে গুরুত্ব দেয়নি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের পক্ষেও মহারাষ্ট্র পুলিশকে মেহবুবের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল ঠাণেতে। তাতেও কাজ হয়নি।
মেহবুবের ভাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা মুম্বাইয়ের ঠাণেতে গেলে মহারাষ্ট্র পুলিশ বলেছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে আটক মেহবুবসহ আরও কয়েকজনকে তারা শিলগুড়িতে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। শিলিগুড়ির বিএসএফের ইউনিটে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে তারা জানতে পারেন, গত শুক্রবার ভোরে মেহবুবসহ আটক সবাইকে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছে। যদিও সরকারিভাবে বিএসএফ এবং মহারাষ্ট্র পুলিশ এই বিষয়ে কিছু জানায়নি। গত এক দেড় মাস ধরে বিএসএফের পুশ ব্যাক চললেও এই বাহিনী সরকারিভাবে কিছু জানাচ্ছে না। অন্যদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে, বিএসএফ এমন অনেককে ঠেলে পাঠাচ্ছে যাদের কাছে ভারতীয় হিসেবে নথিপত্র আছে।