নতুন এক সামুদ্রিক পাখির সন্ধানে বার্ডিংবিডি ট্যুরসের উদ্যোগে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় এসেছি; কিন্তু জায়গামতো গিয়ে ঘণ্টাখানেকের বেশি খুঁজেও সন্ধান পেলাম না। অবশেষে উপকূলীয় বাদাবন পাড়ি দিয়ে কালাদিয়া চরের দিকে গেলাম। বোট সকাল ১০টা নাগাদ কালাদিয়ায় পৌঁছাল। ভাটা লেগে গেছে, জোয়ারের পানি ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে; আর লোনাজলের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে একচিলতে বালুচর।
পাঁচ মিনিটের অপেক্ষা। বুক ভরে দম নিলাম। গত চার বছরে যতবার এখানে এসেছি, ততবারই প্রচুর ছবি তুলেছি; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার একটি চার টেরাবাইটের হার্ড ডিস্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সোনাদিয়ার সব স্মৃতি মুছে গেছে। আজ সেসব স্মৃতির যতটা পারি এখান থেকে নিংড়ানোর চেষ্টা করব।
ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে ওদের খুঁজতে লাগলাম। চার-পাঁচ শ পাখির একটি ঝাঁক সদ্য জেগে ওঠা বালুচরে খাবারের সন্ধানে নেমেছে। স্পিডবোট থেকে হাঁটুপানিতে নেমে ধীরে ধীরে ওদের দিকে এগোচ্ছি আর ক্লিক করছি। পাখিগুলোর নিরাপদ দূরত্বসীমা অতিক্রম করা মাত্রই ওরা উড়ে আকাশে চক্কর মেরে পাশের আরেকটি জেগে ওঠা বালুচরে গিয়ে বসল। আমরাও ওদের পিছু নিলাম। আর এভাবে স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া বেশ কিছু পাখির ছবি পুনরুদ্ধার করতে পারলাম। তবে যে বিশেষ পাখিটির খোঁজে এসেছি, সেটির দেখা পেলাম না।
তবে নতুন পাখিটির দেখা না পেলেও লালচে বর্ণের সুন্দর একটি পাখি দেখলাম সৈকতপাখির মিশ্র ঝাঁকে। ১০–১২ বছর ধরে পাখিটিকে খুঁজছি সুন্দরবন, নিঝুম দ্বীপ, দমার চর, সেন্ট মার্টিন ও সোনাদিয়ায়। অবশেষে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওগুলোকে পেলাম কালাদিয়ায়। আগেই বলেছি, হার্ড ডিস্ক নষ্ট হওয়ায় ছবিগুলো হারিয়ে গেছে। আজ বেশ ধৈর্য নিয়ে আবারও ওগুলোর ছবি তুললাম। তবে এবার আরও কাছে পেলাম। এদের কিছু উড়ন্ত ছবিও তুললাম।
কালাদিয়ার লালচে পাখিগুলো এ দেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি পাথরঘুরানি বাটান। পীতপাথুরে বা লালনুড়ি বাটান নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম ‘রাডি টার্ন স্টোন’। গোত্র স্কোলোপ্যাসিডি, বৈজ্ঞানিক নাম Arenaria interpres। এরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত।
পাথরঘুরানি বাটান ছোট আকারের ও গাট্টাগোট্টা সৈকতপাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ২২ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৮৫ থেকে ১৫০ গ্রাম। প্রজননকালীন ও অন্য সময় প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পালকের রঙে বেশ পার্থক্য থাকে। দেহের ওপরটা কালচে বাদামি। নিচের অংশ, থুতনি ও গলার ওপরটা সাদা। বুকে প্রশস্ত কালচে বাদামি পট্টি; কিন্তু প্রজননকালে মাথা হয় সাদা। দেহের ওপরটা তামাটে লাল রং ধারণ করে। ঘাড় ও বুকে সাদা-কালোর কারুকাজ দেখা যায়। ডানা, কাঁধ ও ঢাকনিতে সাদা-কালো-বাদামি-তামাটে লালের সমন্বয় দেখা যায়। ওড়ার সময় ডানার সাদা ডোরা ও লেজের কালো দাগ চোখে পড়ে। চোখ বাদামি। খাটো ও সোজা চঞ্চুটি কালো। পা খাটো ও পায়ের পাতা উজ্জ্বল কমলা। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারায় কোনো পার্থক্য নেই। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের ওপরে হালকা হলদে ঝালর দেখা যায়।
কালাদিয়ার আকাশে একটি উড়ন্ত পাথরঘুরানি বাটান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প থরঘ র ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাপ্তবয়স্কদের প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ায় অনেকে পর্নো তারকা বলেছে:
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন মডেল-অভিনেত্রী পিয়া বিপাশা। লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শোবিজে পথচলা শুরু হলেও, সিনেমায় নিজের জায়গা করে নিতে পারেননি। ডজনখানেক সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলেও, নানা কারণে অধিকাংশ আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে সবকিছু ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
বর্তমানে দেশটির নিউ ইয়র্কে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন পিয়া। সেখানে এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন, পরে বিয়েও করেন। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়নি, তবে চলতি বছরের শেষের দিকে তা সম্পন্ন করার ইচ্ছা রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
পিয়া বলেন, “বাংলাদেশে কাজ করতে ভালো লাগত না। লবিং ছাড়া ভালো কাজ হতো না। একটা ভালো সিনেমার কথা ছিল, কিন্তু সেটাও হয়নি। আমি কাজ করতে চেয়েছিলাম শুধুই অর্থ উপার্জনের জন্য। যখন দেখলাম সেটা সম্ভব নয়, তখনই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।”
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে অজিত কুমার
সিদ্দিককে লাঞ্ছিত, শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা: যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
বাংলাদেশে তার দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটার পর একমাত্র কন্যাসন্তানকে নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন। পিয়া বলেন, “আমার মেয়ে ছিল, তাই টিকে থাকার জন্য কাজ করতে হতো। কিন্তু যেভাবে কাজ হয়, আমি তা পারতাম না। তাই সিদ্ধান্ত নিই দেশের বাইরে চলে যাওয়ার।”
পাঁচ বছর আগে দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন পিয়া। তিন বছর ইনস্টাগ্রামও বন্ধ রেখেছিলেন। গত এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন এবং নিয়মিত আয় করছেন বলেও জানান পিয়া।
প্রাপ্তবয়স্কদের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েন পিয়া। এ অভিনেত্রী জানান, “পাঁচ মাসে সেখান থেকে ২ লাখ ১৭ হাজার ডলার আয় করেছি। কিন্তু অনেকেই না জেনে সমালোচনা করেছেন, কেউ কেউ পর্নো তারকা বলেও আখ্যা দিয়েছেন। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম, তাই সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি।”
বর্তমানে স্থিতিশীল জীবন কাটাচ্ছেন পিয়া বিপাশা। তার ভাষায়, “এখন এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও চলে। যা আয় করি, তাও খরচ করার সময় পাই না। আমার স্বামী অনেক হিসেবি, সবসময় নতুন নতুন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চায়।”
নিয়মিত জিম, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, এবং পোষা প্রাণীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েই চলে তার দিন। পিয়া বলেন, “ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠি। জিমে যাই, নিয়ম মেনে খাই। নিজের খেয়াল রাখি। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি— টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠা, ভালো স্বামী।”
পিয়া বর্তমানে ইনফ্লুয়েন্সার ও মডেল হিসেবে কাজ করছেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য ছবি ও ভিডিও তৈরি করেন, যেগুলোর একাংশ তোলা হয় তার নিজের বাসায় তৈরি স্টুডিওতে। স্বামী ও মেয়ে মাঝে মাঝে ক্যামেরা ধরে তাকে সহযোগিতা করেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য এড়াতে তিনি মন্তব্যের ঘর বন্ধ রেখেছেন।
খোলামেলা পোশাকে পিয়াকে দেখতে চান তার স্বামী। এ তথ্য উল্লেখ করে পিয়া বলেন, “কী জামা পরি, কেমন পোজ দিই— এসব নিয়েও মানুষ আজেবাজে মন্তব্য করেন। তবে আমার স্বামী এসব দেখে খুব খুশি হয়। সে চায় আমি খোলামেলা জামা পরি, এটা তার ভালো লাগে।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত