Prothomalo:
2025-11-03@07:51:45 GMT

দুর্লভ পাথরঘুরানি বাটান

Published: 12th, March 2025 GMT

নতুন এক সামুদ্রিক পাখির সন্ধানে বার্ডিংবিডি ট্যুরসের উদ্যোগে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় এসেছি; কিন্তু জায়গামতো গিয়ে ঘণ্টাখানেকের বেশি খুঁজেও সন্ধান পেলাম না। অবশেষে উপকূলীয় বাদাবন পাড়ি দিয়ে কালাদিয়া চরের দিকে গেলাম। বোট সকাল ১০টা নাগাদ কালাদিয়ায় পৌঁছাল। ভাটা লেগে গেছে, জোয়ারের পানি ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে; আর লোনাজলের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে একচিলতে বালুচর।

পাঁচ মিনিটের অপেক্ষা। বুক ভরে দম নিলাম। গত চার বছরে যতবার এখানে এসেছি, ততবারই প্রচুর ছবি তুলেছি; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার একটি চার টেরাবাইটের হার্ড ডিস্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সোনাদিয়ার সব স্মৃতি মুছে গেছে। আজ সেসব স্মৃতির যতটা পারি এখান থেকে নিংড়ানোর চেষ্টা করব।

ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে ওদের খুঁজতে লাগলাম। চার-পাঁচ শ পাখির একটি ঝাঁক সদ্য জেগে ওঠা বালুচরে খাবারের সন্ধানে নেমেছে। স্পিডবোট থেকে হাঁটুপানিতে নেমে ধীরে ধীরে ওদের দিকে এগোচ্ছি আর ক্লিক করছি। পাখিগুলোর নিরাপদ দূরত্বসীমা অতিক্রম করা মাত্রই ওরা উড়ে আকাশে চক্কর মেরে পাশের আরেকটি জেগে ওঠা বালুচরে গিয়ে বসল। আমরাও ওদের পিছু নিলাম। আর এভাবে স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া বেশ কিছু পাখির ছবি পুনরুদ্ধার করতে পারলাম। তবে যে বিশেষ পাখিটির খোঁজে এসেছি, সেটির দেখা পেলাম না।

তবে নতুন পাখিটির দেখা না পেলেও লালচে বর্ণের সুন্দর একটি পাখি দেখলাম সৈকতপাখির মিশ্র ঝাঁকে। ১০–১২ বছর ধরে পাখিটিকে খুঁজছি সুন্দরবন, নিঝুম দ্বীপ, দমার চর, সেন্ট মার্টিন ও সোনাদিয়ায়। অবশেষে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওগুলোকে পেলাম কালাদিয়ায়। আগেই বলেছি, হার্ড ডিস্ক নষ্ট হওয়ায় ছবিগুলো হারিয়ে গেছে। আজ বেশ ধৈর্য নিয়ে আবারও ওগুলোর ছবি তুললাম। তবে এবার আরও কাছে পেলাম। এদের কিছু উড়ন্ত ছবিও তুললাম।

কালাদিয়ার লালচে পাখিগুলো এ দেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি পাথরঘুরানি বাটান। পীতপাথুরে বা লালনুড়ি বাটান নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম ‘রাডি টার্ন স্টোন’। গোত্র স্কোলোপ্যাসিডি, বৈজ্ঞানিক নাম Arenaria interpres। এরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত।

পাথরঘুরানি বাটান ছোট আকারের ও গাট্টাগোট্টা সৈকতপাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ২২ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার। ওজন ৮৫ থেকে ১৫০ গ্রাম। প্রজননকালীন ও অন্য সময় প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পালকের রঙে বেশ পার্থক্য থাকে। দেহের ওপরটা কালচে বাদামি। নিচের অংশ, থুতনি ও গলার ওপরটা সাদা। বুকে প্রশস্ত কালচে বাদামি পট্টি; কিন্তু প্রজননকালে মাথা হয় সাদা। দেহের ওপরটা তামাটে লাল রং ধারণ করে। ঘাড় ও বুকে সাদা-কালোর কারুকাজ দেখা যায়। ডানা, কাঁধ ও ঢাকনিতে সাদা-কালো-বাদামি-তামাটে লালের সমন্বয় দেখা যায়। ওড়ার সময় ডানার সাদা ডোরা ও লেজের কালো দাগ চোখে পড়ে। চোখ বাদামি। খাটো ও সোজা চঞ্চুটি কালো। পা খাটো ও পায়ের পাতা উজ্জ্বল কমলা। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারায় কোনো পার্থক্য নেই। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের ওপরে হালকা হলদে ঝালর দেখা যায়।

কালাদিয়ার আকাশে একটি উড়ন্ত পাথরঘুরানি বাটান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প থরঘ র ন

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুসাহিত্যে পুরস্কার চালু করল বুকার

বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন ‘দ্য চিলড্রেন’স বুকার প্রাইজ’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিবছর ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা বইয়ের লেখককে ৫০ হাজার পাউন্ড পুরস্কার দেওয়া হবে।

নতুন পুরস্কার ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে, আর প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুতে। পুরস্কারের বিশেষত্ব হলো, বিচারক প্যানেলে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে শিশু থাকবে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে শিশুদেরও বিচারকের আসনে বসানো হচ্ছে।

প্রথম বছর প্রধান বিচারক থাকবেন শিশুসাহিত্যিক ও বর্তমান শিশুসাহিত্য অ্যাম্বাসেডর ফ্রাঙ্ক কট্রেল-বয়েস। তাঁর সঙ্গে থাকবেন আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক। তাঁরা প্রাথমিকভাবে আটটি বইয়ের শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচন করা হবে, যারা চূড়ান্ত বিজয়ী নির্ধারণে অংশ নেবে।

ফ্রাঙ্ক কট্রেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কারের মধ্য দিয়ে শিশুরা কেবল বইপড়ার আনন্দ পাবে না; বরং নিজেরাই বিচারকের ভূমিকায় থাকবে। ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত বইয়ের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। বুকার ও আন্তর্জাতিক বুকারের মতো এখানেও শর্ট লিস্টে থাকা প্রত্যেক লেখক পাবেন ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড ও চূড়ান্ত বিজয়ী পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
গ্রন্থনা: রবিউল কমল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিশুসাহিত্যে পুরস্কার চালু করল বুকার