মহাকাশে নতুন নক্ষত্র শনাক্ত করা থেকে শুরু করে মানবদেহের অনেক রোগ শনাক্তে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার মস্তিষ্কের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিক্ষয় রোগের আগাম উপসর্গ জানাতে সক্ষম এআই টুল তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ম্যাস জেনারেল বার্মিংহামের একদল গবেষক। নতুন এআই টুলটি ডিমেনশিয়া রোগের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তের পাশাপাশি ভবিষ্যতে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিতে পারে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

গবেষকদের তথ্যমতে, কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ৬৫ বছরের বেশি বয়সী একদল নারীর পাঁচ বছরের ঘুমের তথ্য বা ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) বিশ্লেষণ করতে দেওয়া হয়েছিল এআই টুলটিকে। এরপর তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে প্রায় ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে ডিমেনশিয়া রোগের আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছে এআই টুলটি। আলঝেইমার্স ডিজিজ জার্নালে এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

এআই মডেলটি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্কের তরঙ্গে কোনো ধরনের পরিবর্তন এলে তা শনাক্ত করতে পারে। বিষয়টিকে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে মনে করছেন গবেষকেরা। কারণ, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের কয়েক বছর আগে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হলে সহজেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে গবেষক দলের সদস্য শাহাব হাগায়েগ জানিয়েছেন, এআই টুলটির মাধ্যমে ঘুমের সময় মস্তিষ্কের তরঙ্গের সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্ত করে ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার তথ্য জানা সম্ভব। শুধু তা–ই নয়, পরিধানযোগ্য ইইজি যন্ত্র বাড়িতে ব্যবহার করে রোগীদের ওপর নজর রাখার সুযোগও তৈরি হতে পারে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআই ট ল

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব