চায়ের জেলা হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজারের সুনাম রয়েছে লেবু উৎপাদনেও। বিশেষ করে, শ্রীমঙ্গলের লেবু জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হয় দেশের অন্যান্য এলাকায়। চলতি রমজানে এই উপজেলায় লেবুর দাম চড়া। কৃষকরা কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, এখন উৎপাদনের মৌসুম নয়, বৃষ্টিপাতও হয়েছে কম। যে কারণে বছরের এই সময়ে যে পরিমাণ লেবু হওয়ার কথা, তেমন উৎপাদন হচ্ছে না। ফলে বাজারে আগাম লেবু উঠলেও, পরিমাণে খুবই কম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লেবুর মৌসুমে প্রতিদিন উন্নত মানের কাগজি, চায়না, জারা, আদা, পাতি ও সিডলেস লেবু বিক্রি হয় শ্রীমঙ্গলে। সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ পাইকারি লেবুর বাজার হিসেবে শ্রীমঙ্গলের পরিচিতি রয়েছে। যে কারণে  উৎপাদন মৌসুমে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই বাজারটি লেবু চাষি, পাইকার, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত থাকে। সেখানে যেন এখন লেবুর আকাল।
মৌসুমে এ উপজেলায় লেবুর বেচাকেনা প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখন মৌসুম না হলেও রমজানের কারণে চাহিদা বেড়েছে লেবুর। ফলে বিপাকে পড়েছেন ঢাকা, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা। তাদের অভিযোগ, ছোট-বড় লেবু একই দামে তারা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
মহাজেরাবাদের লেবু চাষি মো.

জলিল খান বলেন, লেবুর ফলন মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে গাছ থেকে আহরণ করা হবে জুলাই-আগস্ট মাসে। তখন লেবুর জন্য প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত দেখা যায়। মার্চ-এপ্রিলে বৃষ্টিপাত না থাকায় লেবুর উৎপাদন হয় খুবই কম। আগাম লেবু আকারে থাকে ছোট। কিছু বড় লেবুর দেখা মিললেও দাম অনেক বেশি। 
জলিল খানের ভাষ্য, মৌসুমে যে পরিপক্ব লেবু পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ২ থেকে ৪ টাকায়, সেই লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকা। কোনোটার দাম আবার ২০-২৫ টাকা। সেই লেবু হাত ঘুরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আর রাজধানীসহ বড় বড় শহরে দাম মিলছে ৪০-৪৫ টাকা।
মৌসুমের আগে লেবুর উৎপাদন বাড়াতে চাষিরা সেচের জন্য ডিপ টিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। কৃষকরা বলেন, মৌলভীবাজারে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাহলেই প্রান্তিক লেবু চাষি থেকে শুরু করে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা লোকশানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
লেবু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের ভাষ্য, রমজান মাসে লেবুর চাহিদা বেশি। তাই কিছু বাগানি অতিরিক্ত পরিশ্রম করে আগাম লেবু উৎপাদন করেছেন। বছরের অন্যান্য সময় 
তারা যথাযথ দাম না পেলেও এই সময়ে বেশ ভালোই পাচ্ছেন। 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক নিলুফার ইয়াছমিন মুনালিসা সুইটি জানান, এখন প্রজননের সময় নয়, লেবু গাছ পরিচর্যার সময়। দাম বেশি, তারপরও কিছু লেবু পাওয়া যাচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় দুই হাজার ৬৯ হেক্টর জমিতে সিডলেস, কলম্ব, জারা, এলাচি ও আদা লেবুর চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিই শ্রীমঙ্গল উপজেলায়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসলাম উদ্দিন এসব বিষয়ে বলেন, চাষিদের সমস্যার বিষয়টি জেনেছেন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন তিনি। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি, অপহরণ ৩

কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে গাছ ফেলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাছবাহী গাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। এসময় ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে তিন জনকে অপহরণ করেছে বলেও অভিযোগ।

সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৭টার দিকে সড়কের হিমছড়ি ঢালায় এ ঘটনা ঘটে।

অপহৃতরা হলেন- জেলার রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের গুইন্যাপাড়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে শাহেদ ও ফাতেমার ঘোনা এলাকার আলমের ছেলে আমির সোলতান। তারা পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। অপর অপহৃত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আরো পড়ুন:

রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৩

শেরপুরে বাসচাপায় যুবক নিহত, বিক্ষুব্ধ জনতার অগ্নিসংযোগ

স্থানীয় নুর আহমদ মান্নান নামের একজন বলেন, ‘‘যাত্রীবাহী দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি মাছবাহী গাড়ি হিমছড়ি ঢালায় পৌঁছালে মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে যানবাহন আটকে দেয়। এসময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পালিয়ে যায়। এরপর অন্য দুই গাড়ির যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ সর্বস্ব লুট করে তারা। পরে তিন জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে নিয়ে যায়।’’

ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মছিউর রহমান বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে, ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’

ঢাকা/তারেকুর/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ