মাগুরার সেই শিশুটির মৃত্যুর পর ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিদের বাড়িতে আবারও ভাঙচুর চালিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। আজ শুক্রবার সকালে মাগুরা পৌর এলাকায় নিজনান্দুয়ালী গ্রামে আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেন তাঁরা।

আজ বেলা ১১টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মূল কাঠামো ভাঙার পাশাপাশি সেখান থেকে গাছপালাও কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িতে কয়েকটি দেয়াল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

আরও পড়ুনমাগুরায় শিশুটির প্রথম জানাজার পর আসামিদের বাড়িতে আগুন১৭ ঘণ্টা আগে

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ওই বাড়িতে লুটপাট শুরু হয়। প্রথমেই বাড়ির জানালা-দরজা ভেঙে বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র লুট করে নেন কিছু লোকজন। এরপর সন্ধ্যা সাতটার পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

গাছ কাটতে থাকা এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বাড়ির জন্য গ্রামের দুর্নাম হয়েছে। এ কারণে এই বাড়ির কোনো নাম-নিশানা আমরা রাখতে চাই না। এই বাড়ির পরিণতি দেখে অন্যরা যাতে শিক্ষা নেয়, সে ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুনসেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় শিশুটির মরদেহ, জানাজা সম্পন্ন১৯ ঘণ্টা আগে

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই বাড়িতে আধা পাকা দুটি ঘর ছিল। একটি ঘরে পাশাপাশি তিনটি কক্ষ এবং আলাদা একটি এক কক্ষের ঘর। সেখানে মা, দুই সন্তান, এক পুত্রবধূ ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মামলার মূল অভিযুক্ত (শিশুটির বোনের শ্বশুর) হিটু শেখ। ঘটনার পর হিটু শেখ, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ওই বাড়িতে হিটু শেখের বৃদ্ধা মা একাই বসবাস করছিলেন। তবে গতকাল দুপুরের পর তাঁকে আর ওই বাড়িতে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়েও এলাকার লোকজন কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুটির ন্যায়বিচারের কথা বলে এই লোকগুলো আরেকটি বড় অন্যায় করছে। এটা করছে মূলত লুটের উদ্দেশ্যে। এই বাড়ি ভাঙচুরের মধ্যে ভালো কিছু দেখি না।’

আরও পড়ুনমাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের মামলার তদন্ত দ্রুততম সময়ে শেষ করা হবে: আইজিপি২১ ঘণ্টা আগেবাড়ির মূল কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছেন লোকজন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ব ড় ত এই ব ড় ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে