গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে ফোনে রেখে ‘বিদায়’ বলে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন এক যুবক। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনি নিহত হন। এর আগে তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘শ্রীপুর রেলস্টেশন! আজ রেলে কাটা লাশ হয়ে যাব।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ দিকের আউটার সিগন্যালের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা অভিমুখে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মরদেহ পড়েছিল।

ওই যুবকের নাম খাইরুল বাসার (৩৫)। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুরশা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া গ্রামে থাকতেন। সেখানে থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

খাইরুল বাসারের (সুজন) ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, মৃত্যুর সাত ঘণ্টা আগে তিনি দুই দফা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। একটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘সুখে থাকিস রাজকুমারী। আর কয়েক ঘণ্টা পরে আমার মৃত্যুর খবর শুনতে পাবি। অনেক ভালোবাসতাম তোকে। কিন্তু তুই আমাকে বাঁচতে দিলি না।’ অপর স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘শ্রীপুর রেলস্টেশন! আজ রেলে কাটা লাশ হয়ে যাব।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, শ্রীপুরের চন্নাপাড়া গ্রামে খাইরুল বাসারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মোসা.

ফাতেমাও থাকেন। সকালে খাইরুল বাসার ভাড়া বাড়ি থেকে বের হন। এরপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও তিনি বাড়িতে ফিরছিলেন না। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় স্ত্রী ফোন করলে খাইরুল বাসার জানান তিনি শ্রীপুর রেলস্টেশনে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্ত্রীকে ফোন করে তিনি বলেন,‘বিদায়’। এরপর ট্রেন চলার শব্দ পান স্ত্রী। দীর্ঘক্ষণ তিনি লাইনে থেকেও আর খাইরুল বাসারের কণ্ঠ শুনতে পাননি।

খাইরুলের স্বজন মো. আশিক বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে খাইরুল বাসারের মরদেহ শনাক্ত করেছেন। স্ত্রীকে ফোনকলে রেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে এমনটি হতে পারে, তা ধারণা করতে পারছেন না।

শ্রীপুর রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার শামীমা জাহান বলেন, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন ঢাকার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশন অতিক্রম করার পর স্টেশনের কাছে ওই ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। রেল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার