সিম্ফোনিক মেটাল ব্যান্ড অপার্থিব প্রকাশ করতে যাচ্ছে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘আবছা নীল কণা’। শিগগিরই একযোগে প্রধান সব ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে অ্যালবামটি প্রকাশ করা হবে বলে অপার্থিব সদস্যরা জানান। আরও জানান, অর্কেস্ট্রা ও পাওয়ার মেটাল রিদমের মিশ্রণের সাতটি গান দিয়ে ‘আবছা নীল কণা’ অ্যালবামটি সাজানো হয়েছে। সম্প্রতি শেষ হয়েছে ‘আবছা নীল কণা’-এর মিউজিক ভিডিওর শুটিং। চলছে পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ।
ব্যান্ডের কণ্ঠশিল্পী ও গিটারিস্ট সালেহীন বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত এই অ্যালবামের ৫টি ট্র্যাক প্রকাশ করেছি। আমাদের সংগীতের প্রতি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় শ্রোতাদের অফুরন্ত ভালোবাসা এবং আবেগ আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করে। প্রথম অ্যালবামের কাজের ক্ষেত্রে শ্রোতাদের সমর্থন এবং ভালোবাসা ছিল আমাদের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, সংগীত হচ্ছে অন্যতম একটি মাধ্যম, যা আমাদের বারবার দেশের মানুষের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।’
অপার্থিব প্রথম মঞ্চে ওঠে ২০০৯ সালে। তখন ব্যান্ডের সবাই ছিলেন কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বর্তমানে, ব্যান্ডের পাঁচ সদস্য সৈয়দ আদনান আলী কিরন [ড্রামার], সালেহীন চৌধুরী উচ্ছাস [কণ্ঠশিল্পী ও গিটারিস্ট], আসফিন হায়দার দিশা [কণ্ঠশিল্পী], আদিয়ান ফয়সাল পূর্ণা [কি-বোর্ডিস্ট] ও সৈয়দ আহসান আলী কিরন [বেজ গিটারিস্ট] কানাডার অটোয়াতে বসবাস করছেন। সেখানেই ধারাবাহিকভাবে সংগীত নিরীক্ষা ও নতুন গানের সব আয়োজন করে যাচ্ছেন তারা। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যাওয়ার সুবাদে এরই মধ্যে অপার্থিব স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের পরিচিতি গড়ে নিতে পেরেছে। তাদের লক্ষ্য, বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের সঙ্গে তাদের সংগীত ভাগ করে নেওয়া এবং মানুষকে আরও আবেগের সঙ্গে বাঁচতে উৎসাহিত করা।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের অক্টোবরে অপার্থিব বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার্তদের সহায়তায় ‘আবছা নীল কণা’ শিরোনামে একটি লাইভ কনসার্টের আয়োজন করেছিল। সে আয়োজনে অপার্থিব ছাড়াও অংশ নিয়েছিল আরও তিনটি বাংলা ব্যান্ড।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব য ন ড দল আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল, ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা
ইসরায়েলের জেরুজালেম শহরের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ দাবানল। শুষ্ক আবহাওয়ায় তীব্র বাতাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা। এমন পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। খবর সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল, বিবিসি, আল জাজিরার
দাবানল নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে ইসরায়েল। দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
দাবানলকবলিত কয়েকটি এলাকার মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি।’
জেরুজালেমের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে বড় দাবানল। সতর্ক করে তিনি বলেন, কিছু সময়ের মধ্যে ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি গতিতে বাতাস বইতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
এই দাবানলের কারণে বুধবার ইসরায়েলের মেমোরিয়া ডেতে তেল আবিব ও জেরুজালেমের মধ্যে সংযোগকারী প্রধান সড়ক ‘রুট-১’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘন ধোঁয়ার মধ্যে মানুষ সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা পরে জরুরি সেবাকর্মীরা মহাসড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সারি সারি গাড়ি তল্লাশি করে দেখছিলেন, ওই সব গাড়ির মধ্যে কেউ আটকে আছেন কি না।
অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, আমরা এখনো জানি না, কী কারণে আগুন লেগেছে। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সূত্রও খুঁজে পাইনি। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
ইসরায়েলি পুলিশ বলেছে, তারা সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ব্যক্তি একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করেছে, জেরুজালেমের পুলিশ কর্মকর্তারা পূর্ব জেরুজালেমের একজন বাসিন্দাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছে। ওই ব্যক্তি তখন শহরের দক্ষিণ প্রান্তের একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন। তার কাছ থেকে একটি লাইটার, তুলা ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, ৫০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি পূর্ব জেরুজালেমের উম তুবা এলাকার বাসিন্দা। উম তুবা এলাকায় আরব ফিলিস্তিনিরা বসবাস করে থাকে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সার দাবানল মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এমন ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি তাদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের সহায়তা চেয়েছেন। ইতালি ও মেসিডোনিয়া থেকে তিনটি উড়োজাহাজ শিগগিরই ইসরায়েলে পৌঁছাবে বলে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি। জীবন বাঁচাতে এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সব বাহিনীকে সক্রিয় করতে হবে।’
ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস জানিয়েছে, প্রায় ১২০টি দল এবং ১২টি অগ্নিনির্বাপণ বিমান ও হেলিকপ্টার দাবানল মোকাবিলায় কাজ করছে।
শামির মেডিকেল সেন্টার ও কপলান মেডিকেল সেন্টারের তথ্যমতে, দাবানলের কারণে অন্তত ডজন খানেক মানুষকে এই দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত হাদাসা মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া’ কেউ যেন হাসপাতালে না আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও যাদের অবস্থা গুরুতর নয়, তাদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দাবানলে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে যে এলাকায় দাবানল দেখা দিয়েছিল, এবারও দাবানল প্রায় একই জায়গায় ছড়িয়েছে।