বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি, সন্ধ্যায় মৃত্যু
Published: 15th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার এজাজ আহমেদ (৩২) নামের এক আসামি মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ শনিবার সন্ধ্যার সময় তিনি মারা যান। এজাজ আহমেদের মরদেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঈদের পর এজাজ আহমেদের বার এট ল করার জন্য লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল।
এজাজ আহমেদের বাবা শাহ আলমের অভিযোগ, গত ১০ ফেব্রুয়ারি যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে তাঁর ছেলেকে হাজারীবাগ থেকে আটক করে নেওয়া হয়। এরপর তাঁকে মোহাম্মদপুর থানার একটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ সময় তাঁকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। তখন এজাজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তিনি জামিনে ছাড়া পেলে তাঁকে ধানমন্ডির জাপান–ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু পুলিশ গতকাল শুক্রবার ভোরে তাঁকে আবার ধরে নিয়ে যায়। আজ শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এজাজের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার অভিযোগে এজাজের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে। সেই মামলায় গতকাল রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে এজাজের বাবা শাহ আলম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, আগের দফায় তাঁর ছেলেকে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে। এ জন্য তাঁর ছেলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে আজ মারা গেলেন।
তবে এজাজের বাবার এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এজাজ আহমেদ ধানমন্ডি এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সহযোগী ছিলেন। ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি যৌথ বাহিনী এজাজকে গ্রেপ্তার করে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। থানায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে। এজাজ আহমেদকে কোনো ধরনের নির্যাতন করেনি পুলিশ। বরং গতকাল ডিবির সহযোগিতায় জাপান–ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে আজ ভোরে আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আগে থেকে কিডনির রোগে আক্রান্ত ছিলেন এজাজ। সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
ব্যক্তিগত সম্পদ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির এক সাংবাদিকের ওপর ভীষণ চটে যান। ওই সাংবাদিকের কারণে ‘অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে’ বলে সতর্ক করেন তিনি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ওই সাংবাদিকের ব্যাপারে নালিশ করারও হুমকি দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এবিসির সাংবাদিক জন লায়ন্সও তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন। লায়ন্স এবিসিতে প্রচারিত ফোর কর্নারস অনুষ্ঠানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।
গতকাল লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কতটা ধনী হয়েছেন? তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে তাঁর যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, সেটি এখন তাঁর সন্তানেরা পরিচালনা করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বেশির ভাগ ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।এরপর লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’
এরপর লায়ন্সকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, তিনি (লায়ন্স) কোথা থেকে এসেছেন।
এরপর ট্রাম্প চটে গিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে লায়ন্স ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি’ করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলতে থাকেন, ‘আমার মতে, আপনি এ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন। আর তারা আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আপনি জানেন, আপনার নেতা (অ্যান্থনি আলবানিজ) শিগগিরই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। আমি তাঁকে আপনার ব্যাপারে বলব। আপনি খুব খারাপ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। আপনি আরও ভালোভাবে কথা বলুন।’
সাংবাদিক লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’এরপর লায়ন্স আবারও কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চুপ করুন’।
গত জুনে কানাডায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও আলবানিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎই তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছেন আলবানিজ।
আরও পড়ুনট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার পর কী বললেন স্টারমার ও আলবানিজ০১ মার্চ ২০২৫সম্প্রতি আলবানিজ বলেছেন, নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন ফোরামে আমাদের দেখা হবে। এটা সম্মেলনের মৌসুম।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলবানিজের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে পেন্টাগনের অকাস পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় বাড়াতে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা।