ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা, পরিবারের দাবি পূর্বশত্রুতা
Published: 16th, March 2025 GMT
বরিশাল নগরীতে শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সুজন নামে স্থানীয় যুবক গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে মারা গেছেন।
শনিবার সন্ধ্যার পর নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। এরপর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তী করা হলে রাত ৮টায় সে মারা যায়।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান গণধোলাইয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে যুবকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি, পূর্বশত্রুতার জেরে সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা শনিবার সন্ধ্যায় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শিশুটি একটি রান্নার পাত্র ফেরত দিতে প্রতিবেশী সুজনের ঘরে যান। ঘরে একা পেয়ে সুজন ওই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে সুজন পালিয়ে যান।
এরপর ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা থানায় সুজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। এদিকে স্থানীয়রা সুজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে তাকে আটকে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুজনকে গণধোলাই দিলে সে গুরুতর আহত হয়। তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুজনের মৃত্যু ঘটে।
সুজনের স্বজনেরা দাবি করেছেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে মিথ্যা অভিযোগে সুজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মানিক সাহা বলেন, ‘‘নিহতের লাশ শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’’
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী শিশুর বাবার করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায়ও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কেউ আটক হননি বলেও জানান মিজানুর রহমান।
পলাশ//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স জন র গণধ ল স জনক
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’