কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ নেতাকে অব্যাহতি
Published: 17th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার নেতার পদ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সংগঠনটি। শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নীতিবহির্ভূত ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (১৫ মার্চ) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নীতিবহির্ভূত ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় চার সদস্যের সদস্য পদ বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে সংগঠনে থাকা দায়িত্ব থেকেও তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব মুখলেছুর রহমান ও জেলা শাখার সদস্য সুমন আহমেদ। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুমোদনকৃত কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম মুবাশ্বির মাহমুদ ও যুগ্ম সদস্য সচিব তালহা জুবায়ের নাবিলের সদস্য পদ বাতিল ও সংগঠনে থাকা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভায় নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সংগঠন বিরোধী ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।”
এ বিষয়ে জানতে অব্যাহতি প্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এর আগে, রবিবার রাত ৮টায় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনের পদবঞ্চিতদের সঙ্গে সংগঠনটির অন্য সদস্য ও নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন জখম হন। তাদের কুষ্টিয়ার আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন র সদস য সদস য স কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।