নুর হোসেন হাক্কানী মাদ্রাসায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
Published: 17th, March 2025 GMT
শহরের গলাচিপা রেললাইনস্থ দৈনিক সচেতন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আলহাজ¦ কাজী মো: ইসলাম মিয়ার পিতা নুর হোসেনের নামে প্রতিষ্ঠিত নুর হোসেন হাক্কানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার উদ্যোগে গত রোববার মাদ্রাসায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সচেতন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক অত্র মাদ্রাসার সভাপতি আলহাজ¦ কাজী মো: ইসলাম মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ¦ কাজী মো: ইসলাম মিয়া বলেন, হাটি হাটি পা পা করে আজ এক বছরে পা দিয়েছে নুর হোসেন হাক্কানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। মানুষ যতই ধনী হোক না কেন, কোন দ্বীনি প্রতিষ্ঠান মসজিদ মাদ্রাসা কারো একার পক্ষে চালানো সম্ভব নয়। মাদ্রাসা মসজিদ সকলের দানে ও সহযোগীতার দ্বারা পরিচালিত হয়। এটা অনেক বড় নেকীর কাজ।
আল্লাহর ঘর মসজিদ নবীর ঘর মাদ্রাসায় সকলের দানে চলে। এরফলে সকলে অশেষ নেকীর মালিক হয়। নুর হোসেন হাক্কানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি নবীর ঘর। এখানে প্রায় ২৫জন গরীব এতিম ছাত্র পড়াশোনা করে। কেহ ১৫ পারা শেষ করেছে। কেহ ২০ পারা মুখস্ত করেছে।
এই সকল ছাত্রদের পাশে দাড়ানো অনেক নেকী ও সাওয়াবের কাজ। এ সময় তিনি এলাকার সকলকে সহযোগীতা করার আহবান জানান। সহযোগীতা যে শুধু টাকা দিয়ে তা নয়, বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েও সহযোগীতার করার জন্য এলাকার বিশিষ্টজনতে আহবান জানান তিনি।
দোয়া ও ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, নারায়নগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ¦ সৈয়দ দিল মোহাম্মদ দিলু, আলহাজ¦ গোলাম রসুল রফিক, আলহাজ¦ কুতুবাুদ্দিন আহম্মেদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, নারায়নগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসন, যুগ্ন সম্পাদক মোক্তার হোসেন, সাংবাদিক জসীম উদ্দিন, কাজী আমির হোসেন রবিন, কাজী ইব্রাহীম, কাজী মো: আসলাম, কাজী আনোয়ার হোসেন, মো: বাবুল মিয়া, বশির আহম্দে, মো: শহিদুল ইসলাম সেন্টু, মোজাম্মেল হোসেন লিটন, পলাশ আহম্মেদ, মোঃ রাকিবুল ইসলাম রকি, কাজী পাপ্পু, কাজী ইসমাঈল, আনেয়ার হোসেনসহ আরো অনেকে। মোনাজাত পরিচালনা করেন হযরত মাও: মুশফিকুর রহমান কাশেমী।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ইফত র সহয গ ত আলহ জ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।