দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতুর উদ্বোধন আজ
Published: 17th, March 2025 GMT
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতু ‘যমুনা রেলসেতু’র উদ্বোধন হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে। ডাবল ট্র্যাকের সেতু পেয়ে খুশি রেলযাত্রীরা। তবে সিঙ্গেল ট্র্যাকের রেললাইন হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল সহসাই মিলবে না। বিষয়টি স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল ট্র্যাক রেললাইন তৈরি করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।
৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের যমুনা রেলসেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্র্যাকের ডুয়েল গেজের সেতু। এটি ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রেলপথ বিভাগ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম। কর্মসূচির মধ্যে যমুনা রেলসেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তে সয়দাবাদ রেলস্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা সেতু পার হবেন। সেখানে ১১টা ৪০ মিনিটে সয়দাবাদ রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলনের পর দুপুর ১২টায় ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফিরে আসবে।
ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশনের মাস্টার শাহীন মিয়া বলেন, সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে পারবে। তবে উদ্বোধনের দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে ৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে। এতে সময় লাগবে সাড়ে তিন মিনিট। বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, রেলসেতুতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে সেতুতে পরবর্তী সময়ে রঙ করার দরকার হবে না।
এদিকে যমুনা রেলসেতু দিয়ে চলাচলকারী প্রতিটি ট্রেনের আসনের শ্রেণি অনুযায়ী ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৪৫ থেকে ১৪৫ টাকা। রেলসেতুর সমন্বিত দূরত্বের নিয়ম অনুযায়ী এই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরে দুই বছর বাড়ানো হলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। যার মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশে জোর সেনাপ্রধানের
কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে জাতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, এই নেতৃত্বই দেশকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে তিন সপ্তাহব্যাপী স্ট্র্যাটেজিক লিডারশিপ প্রশিক্ষণ ক্যাপস্টোন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধান ক্যাপস্টোন ফেলোদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন।
এই কোর্সে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সিনিয়র চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সর্বমোট ৪৫ জন ফেলো অংশগ্রহণ করেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতি গঠনের সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৌশলগত নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি দেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য গতিশীল ও সংস্কারমুখী নেতৃত্বের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোকপাত করে সেনাপ্রধান বলেন, বিদ্যমান পরিবর্তনশীল ভূরাজনীতি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নতুন জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ক্যাপস্টোন কোর্স কৌশলগত অন্তর্দৃষ্টি, সহযোগিতা ও জ্ঞানভিত্তিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এনডিসি কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক বলেন, ‘ক্যাপস্টোন কোর্স জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বস্তুনিষ্ঠ সংলাপ ও একীভূত চিন্তাধারার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এতে অংশগ্রহণকারীদের সক্রিয়, চিন্তাশীল ও সশ্রদ্ধ অংশগ্রহণ তাদের কৌশলগত ও মননশীল চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটিয়েছে এবং বিভিন্ন সংস্থার নেতৃবৃন্দের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের মেলবন্ধন তৈরি করতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।’
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্যাপস্টোন কোর্স ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ পরিচালিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কোর্স। এই কোর্সের লক্ষ্য কৌশলগত সচেতনতা বৃদ্ধি, সূক্ষ্ম চিন্তাভাবনার বিকাশ, আন্তসংস্থার সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার নেতৃত্ব পর্যায়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নবিষয়ক সমন্বিত ধারণা গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, এনডিসির ফ্যাকাল্টি ও স্টাফ অফিসার এবং জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।