বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা আবেদন নিষ্পত্তির যথাযথ ব্যবস্থা নিতে এবং বিদ্যমান ভিসা জটিলতা দ্রুত সমাধানে ইতালির দূতাবাসকে অনুরোধ করেছে ঢাকা।

বুধবার (১৯ মার্চ) পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। ওই সময় এ বিষয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে সচিব এ আহ্বান জানান। 

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

আলোচনাকালে পররাষ্ট্র সচিব ভিসা আবেদনের বিশেষ করে অভিবাসী কর্মীদের আটকে থাকা ভিসার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

তিনি আরো বলেন, “ভিসা প্রদানে এই ধরনের বিলম্বের ফলে ওয়ার্ক পারমিট (নুলা ওস্তাস) মেয়াদোত্তীর্ণ বা বাতিল হতে পারে। এতে ভিসা প্রার্থী ও তাদের পরিবারের উপর বিশাল আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।”

রাষ্ট্রদূত আলেসান্দ্রো এই বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গত বছরের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া সকল লুল্লা ওস্তাস বর্তমানে ইতালিয় সরকারের নতুন আইনের অধীনে স্থগিত রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “আইনটি গৃহীত হওয়ার আগে যারা ইতিমধ্যেই ভিসা আবেদন জমা দিয়েছেন তাদের ভ্রমণ নথি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

রাষ্ট্রদূত আরও জানান যে, লুল্লা ওস্তার পুনঃপরীক্ষা প্রক্রিয়া কেবল ইতালির প্রাদেশিক অভিবাসন কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হয়, যারা লুল্লা ওস্তা নিশ্চিত বা বাতিল করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “মুলতুবি থাকা লুল্লা ওস্তার যাচাই-বাছাইয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও ক্ষমতা দূতাবাসের নেই।”

প্রক্রিয়াকরণের সময় সম্পর্কে একটি প্রশ্নের বিষয়ে, ইতালিয় রাষ্ট্রদূত ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, দূতাবাস ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিটি ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অবস্থানে নেই।

বাংলাদেশে গৃহীত কাজের ভিসা আবেদন এবং ইতালিতে ‘ফ্লো ডিক্রি’ বাস্তবায়নের বাধ্যতামূলক নিয়ন্ত্রণের জন্য কখনও কখনও ৯০ দিনেরও বেশি সময় লাগে।

“লুল্লা ওস্তা”-এর মেয়াদ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত আলেসান্দ্রো বলেছেন, “আইনত স্থগিতাদেশের ফলে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ হিমায়িত অবস্থায় রয়েছে।”

রাষ্ট্রদূত আলেসান্দ্রো পররাষ্ট্র সচিবকে আশ্বস্ত করেছেন, তিনি ইতালির উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে মুলতবি থাকা লুল্লা ওস্তাসের পুনঃপরীক্ষা দ্রুত করার এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যাটির সমাধানের অনুরোধ পৌঁছে দেবেন।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আল স ন দ র পরর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত