কেন আমাদের দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রস্তাব
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র ও তরুণ নেতাদের উদ্যোগে এ দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম পাঠ করেন ঘোষণাপত্র। ঘোষণাপত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাষ্ট্রকল্প ফুটে ওঠে। তবে সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদের দাবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার জন্যই গণপরিষদের দাবি সামনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে দলটির কোনো কোনো নেতা ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পেতে চেয়েছেন।
যেকোনো নতুন দলের নতুন দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কিছু পাল্টাপাল্টি বাক্যবিনিময় হওয়া স্বাভাবিক। তবে যে ভাষায় বিএনপির অনেক নেতাকে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেল, তা দুঃখজনক।
গণপরিষদের দাবির ব্যাপারে বিএনপির ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু গণপরিষদের দাবি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার দুরভিসন্ধি কীভাবে হয়, তা অস্পষ্ট। আসলে নতুন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রকাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার না করে শুধু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নির্বাচনী ব্যবস্থা বাংলাদেশে অতীতেও ছিল। কিন্তু কোনো দলকেই বাধ্য করা ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত করা যায়নি। নির্বাচিত সরকারগুলোর হাত ধরেই এ দেশে অনির্বাচিত সরকার এসেছে। এ কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রক্রিয়াকে ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’ বলেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্টতই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ বলতে কেবল সংসদ নির্বাচন বোঝেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোকে তাঁরা হয় আমলে নিতে চান না, অথবা এর সুবিধা ভোগ করতে চান। এ কারণে এমনকি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান অথবা নিদেনপক্ষে সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিও তাঁদের কাছে ‘ষড়যন্ত্র’ ঠেকে।
সম্প্রতি সম্পাদক নূরুল কবীর এক সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, নির্বাচিত গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন ও গণভোটের মাধ্যমে জনগণ কর্তৃক সেই খসড়া সংবিধানের অনুমোদনই রাজনৈতিকভাবে সঠিক পন্থা। এ প্রক্রিয়ায় যদি প্রকৃত অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন ও রাষ্ট্র সংস্কার করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ হবে বলে নূরুল কবীর মনে করেন। সেকেন্ড রিপাবলিকের দাবির মধ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ আবিষ্কার করা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ঘাটতি বলেও তিনি মত রাখেন। (সম্পাদকীয়, নিউ এজ, ২ মার্চ ২০২৫)
এ পর্যায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন দল এনসিপির সেকেন্ড রিপাবলিকের রূপকল্প আসলে কেমন?
প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান আন্দোলনে পূর্ব বাংলা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেও পাকিস্তান রাষ্ট্রে তারা শোষণ ও জুলুমের শিকার হয়। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশের জনগণ একদলীয় বাকশাল, সামরিক শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে।
গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।আশির দশকে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত তিন জোটের রূপরেখাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দলগুলো। সাময়িকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা হাসিল করা গেছে। কিন্তু প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অধরাই থেকে গেছে। এর বড় কারণ, ১৯৭২ সালে প্রণীত একদলীয় ও স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধান পরিবর্তনের কথা রাজনৈতিক দলগুলো কখনো বিবেচনা করেনি। বরং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনেই নির্বাচনী রাজনীতি এগিয়ে নিয়েছে।
এই ভুলের কারণে এমনকি নির্বাচনী ব্যবস্থাটুকুও নিরঙ্কুশ ও নিরবচ্ছিন্ন থাকেনি। নির্বাচিত সরকারের হাত ধরেই অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার দেশ শাসন করেছে। এক-এগারোর বিরাজনৈতিকীরণ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক-এগারোর সম্প্রসারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার আলোকেই বোঝা দরকার।
গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।
আরও পড়ুনগণপরিষদ ও সেকেন্ড রিপাবলিক কেন০৮ মার্চ ২০২৫এই দীর্ঘ সময় জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ সঠিক নেতৃত্ব ও রাজনীতির অপেক্ষায় ছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। তবে জনগণ ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণ জানে যে ভোটের দাবিতে আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। তাই ভোটের দাবিতে আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজের শক্তিতেই করতে হবে। তারা সফল হতে পারলে জনগণ অবশ্যই ভোট দেবে। কিন্তু এ দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকে জনগণ রাস্তায় নেমে জীবন দেবে না।
সম্পূর্ণ অপরিচিত ছাত্রনেতাদের ডাকে গত জুলাই মাসে কেন জনগণ রাস্তায় নেমে এল! এ সত্য আন্তরিকতার সঙ্গে অনুধাবন করা দরকার। এই ছাত্রনেতারা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অধীন নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে রাজপথ দখল করতে বলেননি। তাঁরা ফ্যাসিবাদী সরকার ও ব্যবস্থার বিলোপের ডাক দিয়েছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে লাখো তরুণ রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের সমর্থনে আপামর জনতা তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায়। এক দফা আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ পরিণত হয় গুপ্ত দলে। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
দেয়ালে দেয়ালে তরুণেরা লিখেছেন—‘বাংলাদেশ ২.
জনগণের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি নির্বাচিত গণপরিষদ গঠন করা প্রয়োজন। এর দায়িত্ব হবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন। নব্বইয়ে প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা চব্বিশে বাস্তবায়ন করতে হবে, যেখানে রাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোটাধিকার অবাধ ও সুরক্ষিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীই একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হবেন না। সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটবে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হবে দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও জনসেবামুখী। আইনের দ্বারা বেআইনি শাসন নয়, বরং প্রকৃত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার ও মর্যাদা ভোগ করবে। লুটপাট ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ জনকল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। সমাজ হবে দায় ও দরদের, যেখানে জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ণের শিকার হতে হবে না। রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে সমান গুরুত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এই পুনর্গঠিত রাষ্ট্রই হবে দ্বিতীয় রিপাবলিক। এর মানে অতীতে সব গৌরবজনক ইতিহাস ও লড়াই-সংগ্রামকে অস্বীকার করা নয়। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও নব্বইয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক দায় চব্বিশের ওপর বর্তায়। একে স্রেফ ক্ষমতার হাতবদলে নামিয়ে আনলে তা হবে শহীদের রক্তের সঙ্গে চরম বেইমানি।
যাঁরা সংসদ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন, তাঁরা কেন গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তাবে ‘ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পাচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়। এনসিপি এমন নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্য দিয়ে নির্বাচিতরা প্রথমে সংবিধান প্রণয়ন অথবা সংস্কার করবেন। তারপর সেই প্রণীত বা সংস্কারকৃত সংবিধানের অধীন দেশ পরিচালনা করবে তথা সংসদ হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকবে। বিদ্যমান বাস্তবতায় এনসিপির এ প্রস্তাব ঐতিহাসিক। এর মাধ্যমে ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবিও পূরণ করা সম্ভব হবে। সংস্কার ও নির্বাচন উভয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের এর চেয়ে বাস্তবসম্মত ফর্মুলা আর হয় না। নতুন দাবি ও প্রস্তাবের মধ্যে ষড়যন্ত্র না খুঁজে নতুন দলের উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে হাজির থাকা মধ্যস্থতার সূত্র ধরে ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টিতে রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে আসবে, এমন প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।
● সারোয়ার তুষার লেখক, গবেষক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ন ড র প বল ক ন র ব চ ত সরক র গণত ন ত র ক স ন শ চ ত কর ব যবস থ র ছ ত র জনত র ক ব যবস ষড়যন ত র ব এনপ র জনগণ র র র জন ক র কর নত ন দ এনস প ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের তারিখ এখনো জানা যায়নি, তবে সময় দ্রুত এগিয়ে আসছে। এখন সরকার বা কোনো দলের পক্ষেই নির্বাচনের বাস্তবতা থেকে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। কোন দল কতটা প্রস্তুত, কোন দলের জনসমর্থন কেমন এবং কে আসবে ক্ষমতায়—চায়ের কাপের আড্ডা থেকে শুরু করে সর্বত্র এ নিয়েই আলোচনা চলছে।
এ আলোচনা হচ্ছে পারিবারিক খাবার টেবিলে, গ্রামগঞ্জে, চায়ের দোকানে, শহরের ক্যাফেতে; আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তো বটেই। ইন্টারনেটের যুগে এসব আলোচনার কোনো ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা নেই।
তবে বেশির ভাগ আলোচনাই এখনো সাময়িক বা টেনটেটিভ—পরিপক্বতার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। জনগণের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাকে কেন্দ্র করেই আমাদের এ আলোচনা।
রাজনীতিতে জনগণ খুঁজছে কিছু আকাঙ্ক্ষিত ফ্যাক্টরজনগণ এখনো পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারছে না—দলগুলোর অবস্থান তাদের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে কতটা মেলে এবং কোন দল সত্যিকারে দেশের শাসনক্ষমতা নিয়ে একটি সম্ভাবনাময় সরকার গঠন করতে পারবে। তবে অনেক অনিশ্চয়তার মধ্যেও কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বেশির ভাগ মানুষ এখনো দলগত সমর্থনে স্থায়ী বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জনগণ তাদের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়া-পাওয়ার উপাদানগুলোকে দলগুলোর সঙ্গে মেলাতে চেষ্টা করছে।
যেসব দল শৃঙ্খলাবোধ প্রদর্শন করতে পারছে এবং নিজেদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে পারছে, এখন পর্যন্ত তারাই তুলনামূলকভাবে বেশি লাভবান বলে মনে হচ্ছে।
একটা বিষয় স্পষ্ট—দেশের জনগণ চায়, প্রতিটি দল তাদের নেতিবাচক কার্যকলাপ থেকে বেরিয়ে আসুক। রাজনীতিতে ক্রমাগত বিশৃঙ্খলা দেখতে দেখতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
আরেকটি বিষয়, যা সাধারণ জনগণের খুবই অপছন্দ, তা হলো রাজনীতিবিদদের বাগাড়ম্বর। যাঁরা সফল হতে চান, তাঁদের শৃঙ্খল ও শালীন হতে হবে।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘রাজনীতিতে ডান ও বামের বিভাজন মুছে যাচ্ছে।’
সত্যিকার অর্থে দেশের মানুষ এখন আর আদর্শিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। গত ৩৫ বছরে আদর্শিক রাজনীতি ‘প্রমোট’ ও প্রচার করতে গিয়ে রাজনীতিবিদেরা দেশে চরম বিশৃঙ্খলা ও বিভাজন সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের সেই আদর্শ জনগণের কোনো উপকারে আসেনি।
তাই আপাতত আদর্শ ও দফাভিত্তিক রাজনীতি সম্ভবত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বামপন্থী দলগুলো। তারা আদর্শের কলহে রাজনীতির বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছে।
আরেকটি বিষয় এখনো খুব আলোচনায় আসেনি, সেটি হলো, বাংলাদেশে রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর পদচারণকে দেশের জনগণ ইতিবাচকভাবে দেখছে। তবে এককভাবে ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে নির্বাচনী রাজনীতিতে জনগণ আগে কখনো পূর্ণমাত্রায় সমর্থন দেয়নি।
আরও পড়ুনবিএনপি-জামায়াতের চার যুগের বন্ধুত্বের কী হলো১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিমপ্রধান দেশগুলো (পাকিস্তান থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত) প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য। কোনো রাজনৈতিক দলের নামে ‘ইসলাম’ শব্দটি থাকলেই যে আমাদের দেশের ধর্মভীরু মানুষ দলবদ্ধভাবে তাদের ভোট দেবে, তা কখনো হয়নি এবং সম্ভবত ভবিষ্যতেও হবে না।
যেসব রাজনৈতিক দল বৃহত্তর পরিসরে সাংগঠনিকভাবে আমাদের সমাজ ও জনগণের মতোই দেখতে, তারাই সব সময় ব্যাপকভাবে জনগণের স্বীকৃতি পাবে।
যেসব উপাদান বা ফ্যাক্টর বিবেচনা করে জনগণ এবার রাজনৈতিক দলগুলোকে বিচার করতে পারে, সেগুলো হলো—
১. সুশৃঙ্খল ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার;
২. নেতিবাচক কার্যকলাপ পরিহার এবং শুদ্ধ রাজনীতির ধারক হওয়া;
৩. ভারসাম্যপূর্ণ ও বহুত্ববাদী সংমিশ্রণে দলীয় সংগঠন গঠন;
৪. আদর্শের রাজনীতি নয়, বরং দেশ পরিচালনায় বাস্তব সক্ষমতা।
এ পর্যায়ে আমরা বর্তমান বড় দুই রাজনৈতিক দল—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নিয়ে কথা বলব এবং দেশের রাজনৈতিক সংলাপে তাদের অবস্থানকে এই চার ফ্যাক্টরের নিরিখে মূল্যায়ন করব।
এনসিপি: ‘চাপের রাজনীতি’ ছাড়তে হবেএ আলোচনা থেকে আমরা এনসিপিকে বাইরে রাখব দুটি কারণে। প্রথম কারণ হলো, এনসিপির রাজনৈতিক পরিচিতি এখনো বিকশিত হচ্ছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, এখন পর্যন্ত এনসিপির সব কার্যক্রম শুধু জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে। ভোটের রাজনীতিতে তাদের খুব উৎসাহভরে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে এনসিপি নিশ্চয়ই বাস্তবতা মেনে নিয়ে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেদের আরও প্রসারিত করবে।
এনসিপি সম্বন্ধে একটা মন্তব্য এখানে বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হবে না। সেটি হলো, তারা দলীয়ভাবে ‘চাপের রাজনীতি’কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যেমন শাপলা প্রতীক দিতেই হবে এবং অন্য সব বিষয়ও তাদের চাওয়ামতো হতে হবে। তাদের এই ‘চাপের রাজনীতি’ যে জনগণ খুব পছন্দ করছে না, তা তাদের বুঝতে হবে।
বিএনপি আগেও ক্ষমতায় ছিল। তাদের দলে অনেক পরিচিত নেতা রয়েছেন, যাঁরা আগেও দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকার চালিয়েছেন। এটাও সত্য, তাদের কিছু নেতার বিতর্কিত অতীত রয়েছে। বিএনপিতে তরুণ একটা উচ্চশিক্ষিত গ্রুপও অপেক্ষা করছে নেতৃত্বে যোগ দিতে। তাঁদের অনেকেই নিজেদের মা–বাবার হাত ধরে বিএনপিতে এসেছেন। সব মিলিয়ে বিএনপি দাবি করতে পারে, তারা দেশ পরিচালনায় সক্ষম একটা রাজনৈতিক দল। বিএনপির ঘাটতি ও শক্তি কোথায়বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলাভিত্তিক নেতারা গত ১৫ বছর সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে আছেন, যেদিন অনুকূল পরিবেশে কে কোথায় শীর্ষ প্রতিনিধি বা সংসদ সদস্য হবেন, তা নির্ধারিত হবে। কোনো কোনো এলাকায় বিএনপির ১৫ থেকে ২০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী দাঁড়িয়ে আছেন। একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে গিয়ে তারা যত বেশি বিশৃঙ্খলা দেখাবে, ততই দলের নেতিবাচকতা বাড়বে।
বিএনপির চাঁদাবাজি, দখলদারি—এসব নেতিবাচক দিক এমনিতেই দিন দিন ‘আয়তনে’ বাড়ছে। দলকে শুদ্ধ করার তাদের ‘দন্তহীন’ প্রচেষ্টাগুলো কোনো কাজ দেয়নি। ডাকসু নির্বাচনের পরেই বলেছিলাম, বিএনপিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। পরবর্তী সময়ে জাকসু, চাকসু ও রাকসুর ফলাফলেও তা প্রতিফলিত হয়েছে।
ধারণা করি, শিবিরের ‘ভালোত্ব’ নয়, আদতে বিএনপির জন্যই ছাত্রদল তলিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রদলের দুর্ভোগ বিএনপির নির্বাচনী ভাগ্যেকে কতটুকু পিছিয়ে দেবে, সেদিকে সবারই চোখ থাকবে।
আরও পড়ুনবিএনপি ও এনসিপির টানাপোড়েনে ‘প্রিজনার্স ডিলেমায়’ পড়তে পারে দেশ ১৩ আগস্ট ২০২৫ডাকসুতে ছাত্রদলের হার, বিএনপিকে যা ভাবতে হবেবিএনপির সবচেয়ে বড় সুবিধা, তারা আমাদের দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে সমানভাবে প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদের ছোট-বড় যেকোনো সমাবেশে গেলে সেগুলোকে আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীর একটা ভালো নমুনা মনে হবে। তাদের মধ্যে কিছুটা মৌলবাদী ঘরানার, কিছুটা ভাসানী–সমর্থক ঘরানার, কিছুটা মুজিবীয় ঘরানার, কিছুটা জাতীয়তাবাদী, কিছুটা বামপন্থী—সবই পাওয়া যাবে।
বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি—দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বিএনপির এই বহুত্ববাদী রঙে আশ্বস্ত হবে। বৃহত্তর সমাজের ভারসাম্য বজায় না রাখতে পারলে যে উত্তাল অবস্থা হবে, তাতে কেউ–ই নিরাপদ থাকবে না।
বিএনপি আগেও ক্ষমতায় ছিল। তাদের দলে অনেক পরিচিত নেতা রয়েছেন, যাঁরা আগেও দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকার চালিয়েছেন। এটাও সত্য, তাদের কিছু নেতার বিতর্কিত অতীত রয়েছে। বিএনপিতে তরুণ একটা উচ্চশিক্ষিত গ্রুপও অপেক্ষা করছে নেতৃত্বে যোগ দিতে। তাঁদের অনেকেই নিজেদের মা–বাবার হাত ধরে বিএনপিতে এসেছেন।
সব মিলিয়ে বিএনপি দাবি করতে পারে, তারা দেশ পরিচালনায় সক্ষম একটা রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে এ দাবি করা সহজ হবে না। যতই ভোটের সময় কাছে আসবে, ততই ‘দেশ পরিচালনায় সক্ষমতা’ ফ্যাক্টর বিএনপির জন্য সহায়ক হবে।
দুর্নীতিমুক্ত দল হিসেবে জামায়াত নিজেদের জন্য একটা ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এই ইমেজ অনেকটা তুলনামূলক। যেমন ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতা–কর্মীদের যত নেতিবাচক ঘটনা জনগণের চোখে ধরা পড়েছে, সে তুলনায় জামায়াতের ঘটনা অনেক কম। সিলেটের সাদাপাথর দুর্নীতিতে দুদকের প্রতিবেদনে যেহেতু সব দলই জড়িত ছিল, সেহেতু সে ঘটনা জামায়াতকে এককভাবে কলঙ্কিত করেনি।জামায়াতে ইসলামী কোথায় এগিয়েদুর্নীতিমুক্ত দল হিসেবে জামায়াত নিজেদের জন্য একটা ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এই ইমেজ অনেকটা তুলনামূলক। যেমন ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতা–কর্মীদের যত নেতিবাচক ঘটনা জনগণের চোখে ধরা পড়েছে, সে তুলনায় জামায়াতের ঘটনা অনেক কম। সিলেটের সাদাপাথর দুর্নীতিতে দুদকের প্রতিবেদনে যেহেতু সব দলই জড়িত ছিল, সেহেতু সে ঘটনা জামায়াতকে এককভাবে কলঙ্কিত করেনি।
জামায়াতকে তাদের মনোনীত প্রার্থী নিয়ে খুব বিশৃঙ্খলায় পড়তে হবে না। দলের নেতারাও মোটামুটি একই সুরে কথা বলবেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দল একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে গিয়ে যত বেশি বিশৃঙ্খলায় পড়বে, ততই জামায়াতের ইমেজ ভালো দেখাবে। শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার জামায়াতের জন্য ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে।
জামায়াতে ইসলামীর বিগত কয়েকজন আমিরকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা বলবেন, বর্তমান আমির শফিকুর রহমানই তুলনামূলকভাবে অধিক নমনীয় এবং পরিবর্তনীয়। তিনি লেখাপড়া করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানে, ছাত্রাবস্থায় জাসদের রাজনীতি করতেন। তিনি যেহেতু ডগমা বা প্রচলিত সূত্র ধরে জামায়াতের রাজনীতিতে আসেননি, তাই তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরও প্রসারিত।
শফিকুর রহমানের কিছু কিছু উদ্যোগ জামায়াতের জন্য ইতিবাচক মনে করা হয়।
সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তায় শফিকুর রহমানের উদ্যোগ—তাদের মন্দিরে গিয়ে অভয় প্রদান—অনেকের কাছে নির্ভেজাল মনে হয়েছে। তিনি হিন্দু জনগণকে জামায়াতকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাঁদের জামায়াত থেকে মনোনয়ন দেওয়ার কথাও বলেছেন। তবে জামায়াতের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও অবকাঠামো যত দিন না বদলাবে, শফিকুর রহমানের একক প্রচেষ্টা সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই জামায়াত এখনো একটা সমজাতীয় বা হোমোজেনাস দল এবং এটা তাদের জন্য নেতিবাচক হয়েই থাকবে।
আরও পড়ুনজামায়াত এগিয়ে, বিএনপি কেন পিছিয়ে ০৪ অক্টোবর ২০২৫জামায়াতকে এখনো বিশেষ আদর্শ বা মতবাদের বাহক হিসেবে গণ্য করা হয়। জামায়াত তাদের আদর্শ ও মতবাদের ভিত্তিতে বড় কোনো সুবিধা পাবে না। আবার যাঁরা জামায়াতকে পাকিস্তানপন্থী বা একাত্তরে পাকিস্তানিদের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে পরাস্ত করতে চান, তাঁরাও খুব সুবিধা করতে পারছেন না।
তবে এটা এখনকার অবস্থা—ভবিষ্যতে ‘একাত্তরের ইতিহাস’ হাওয়াইয়ের সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো যে কখন জামাতের জন্য বিস্ফোরিত হবে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবে না। তবে এখন অন্য ফ্যাক্টরগুলোই বেশি গুরুত্ব নিয়ে সামনে আসছে।
আরেকটা ফ্যাক্টর জামায়াতের বিপক্ষে কাজ করবে। সেটি হলো, দলের ওপরের সারির দু-চারজন নেতা ছাড়া অন্যরা সাধারণ জনগণের কাছে একদম অপরিচিত। একটা কর্মশীল সরকার গঠন এবং সুষ্ঠুভাবে আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনায় তাঁরা কতটুকু সক্ষম? কারা দেশের নেতা হবেন?
নির্বাচন যত কাছে আসবে, এই প্রশ্নগুলো আরও সামনে আসবে এবং অধিকতর গুরুত্ব পাবে।
চাই শুদ্ধতা ও বাস্তববাদী সংমিশ্রণনির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, জনগণের মধ্যে এই উপকরণগুলোর যাচাই-বাছাই আরও বাড়বে। কোন কোন উপকরণের গুরুত্ব আস্তে আস্তে বাড়বে কিংবা কোনগুলোর গুরুত্ব কিছুটা কমবে, তার ফয়সালা হতে আরও সময় লাগবে।
কিছু কিছু অনুমান হয়তো করা যায়, তবে এক্ষুনি কোনো শেষ কথা বলা ঠিক হবে না। যেমন একটা পর্যায়ে জনগণ শুধু ‘শুদ্ধ রাজনীতি’ কিংবা ‘দেশ পরিচালনায় সক্ষমতা’-কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে যাবে। আবার এমনটা না–ও হতে পারে; হয়তো তারা সব ফ্যাক্টর বিবেচনা করেই ভোট দেবে।
আরেকটি দেখার বিষয় হলো, ৫ আগস্টের আগে বিএনপি ৪০ শতাংশ জনসমর্থন অধিকারে রাখা দল ছিল। এখন তাদের যারা প্রতিদ্বন্দ্বী, সেই জামায়াত ছিল ৫ শতাংশ লোকের সমর্থন পাওয়া দল। শুধু বিএনপির নেতিবাচকতা দিয়ে জামায়াত কি জনসমর্থনের এই বিরাট ব্যবধান এত সহজে ঘুচাতে পারবে?
বিশ্বজুড়ে এখন একটা অস্থিরতা চলছে। বিভিন্ন উন্নয়নকামী দেশের জনগণ নিজেদের দারুণভাবে প্রতারিত ভাবছে। এ অবস্থায় আমাদের দেশের জনগণ রাজনীতিতে খুঁজছে শুদ্ধতা ও বাস্তববাদী সংমিশ্রণ। যেসব রাজনৈতিক দল জনগণের চাওয়া–পাওয়ার ফ্যাক্টরগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের নির্বাচনে এগিয়ে আসবে, তারাই বেশি সুফল পাবে এবং সফল হবে।
সালেহ উদ্দিন আহমদ লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
ই-মেইল: salehpublic711@gmail
*মতামত লেখকের নিজস্ব