বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র ও তরুণ নেতাদের উদ্যোগে এ দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম পাঠ করেন ঘোষণাপত্র। ঘোষণাপত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাষ্ট্রকল্প ফুটে ওঠে। তবে সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদের দাবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে।

বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার জন্যই গণপরিষদের দাবি সামনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে দলটির কোনো কোনো নেতা ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পেতে চেয়েছেন।

যেকোনো নতুন দলের নতুন দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কিছু পাল্টাপাল্টি বাক্যবিনিময় হওয়া স্বাভাবিক। তবে যে ভাষায় বিএনপির অনেক নেতাকে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেল, তা দুঃখজনক।

গণপরিষদের দাবির ব্যাপারে বিএনপির ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু গণপরিষদের দাবি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার দুরভিসন্ধি কীভাবে হয়, তা অস্পষ্ট। আসলে নতুন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রকাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার না করে শুধু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নির্বাচনী ব্যবস্থা বাংলাদেশে অতীতেও ছিল। কিন্তু কোনো দলকেই বাধ্য করা ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত করা যায়নি। নির্বাচিত সরকারগুলোর হাত ধরেই এ দেশে অনির্বাচিত সরকার এসেছে। এ কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রক্রিয়াকে ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’ বলেন।

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্টতই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ বলতে কেবল সংসদ নির্বাচন বোঝেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোকে তাঁরা হয় আমলে নিতে চান না, অথবা এর সুবিধা ভোগ করতে চান। এ কারণে এমনকি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান অথবা নিদেনপক্ষে সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিও তাঁদের কাছে ‘ষড়যন্ত্র’ ঠেকে।

সম্প্রতি সম্পাদক নূরুল কবীর এক সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, নির্বাচিত গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন ও গণভোটের মাধ্যমে জনগণ কর্তৃক সেই খসড়া সংবিধানের অনুমোদনই রাজনৈতিকভাবে সঠিক পন্থা। এ প্রক্রিয়ায় যদি প্রকৃত অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন ও রাষ্ট্র সংস্কার করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ হবে বলে নূরুল কবীর মনে করেন। সেকেন্ড রিপাবলিকের দাবির মধ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ আবিষ্কার করা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ঘাটতি বলেও তিনি মত রাখেন। (সম্পাদকীয়, নিউ এজ, ২ মার্চ ২০২৫)

এ পর্যায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন দল এনসিপির সেকেন্ড রিপাবলিকের রূপকল্প আসলে কেমন?

প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান আন্দোলনে পূর্ব বাংলা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেও পাকিস্তান রাষ্ট্রে তারা শোষণ ও জুলুমের শিকার হয়। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশের জনগণ একদলীয় বাকশাল, সামরিক শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে।

গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।

আশির দশকে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ঘোষিত তিন জোটের রূপরেখাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দলগুলো। সাময়িকভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা হাসিল করা গেছে। কিন্তু প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অধরাই থেকে গেছে। এর বড় কারণ, ১৯৭২ সালে প্রণীত একদলীয় ও স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধান পরিবর্তনের কথা রাজনৈতিক দলগুলো কখনো বিবেচনা করেনি। বরং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনেই নির্বাচনী রাজনীতি এগিয়ে নিয়েছে। 

এই ভুলের কারণে এমনকি নির্বাচনী ব্যবস্থাটুকুও নিরঙ্কুশ ও নিরবচ্ছিন্ন থাকেনি। নির্বাচিত সরকারের হাত ধরেই অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার দেশ শাসন করেছে। এক-এগারোর বিরাজনৈতিকীরণ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক-এগারোর সম্প্রসারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার আলোকেই বোঝা দরকার।

গত ১৫ বছর বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ান্ত ধ্বংস নিশ্চিত করেছেন গণহত্যাকারী হাসিনা। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র, আমলাতন্ত্র, মিডিয়া, সাংস্কৃতিক জগৎ ও অলিগার্ক ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল অপরাধীদের সিন্ডিকেট। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির রূপ লাভ করে। সব ক্ষেত্রেই মেগা দুর্নীতির রেকর্ড গড়ে তোলে এই সিন্ডিকেট।

আরও পড়ুনগণপরিষদ ও সেকেন্ড রিপাবলিক কেন০৮ মার্চ ২০২৫

এই দীর্ঘ সময় জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ সঠিক নেতৃত্ব ও রাজনীতির অপেক্ষায় ছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। তবে জনগণ ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণ জানে যে ভোটের দাবিতে আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। তাই ভোটের দাবিতে আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজের শক্তিতেই করতে হবে। তারা সফল হতে পারলে জনগণ অবশ্যই ভোট দেবে। কিন্তু এ দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকে জনগণ রাস্তায় নেমে জীবন দেবে না।

সম্পূর্ণ অপরিচিত ছাত্রনেতাদের ডাকে গত জুলাই মাসে কেন জনগণ রাস্তায় নেমে এল! এ সত্য আন্তরিকতার সঙ্গে অনুধাবন করা দরকার। এই ছাত্রনেতারা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অধীন নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে রাজপথ দখল করতে বলেননি। তাঁরা ফ্যাসিবাদী সরকার ও ব্যবস্থার বিলোপের ডাক দিয়েছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে লাখো তরুণ রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের সমর্থনে আপামর জনতা তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায়। এক দফা আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ পরিণত হয় গুপ্ত দলে। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

দেয়ালে দেয়ালে তরুণেরা লিখেছেন—‘বাংলাদেশ ২.

০’, ‘স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব’। তরুণদের এই আকুতি ও রূপকল্পগত দৃঢ়তাকে অবজ্ঞা করে নতুন বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি দাঁড়াবে না।

জনগণের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি নির্বাচিত গণপরিষদ গঠন করা প্রয়োজন। এর দায়িত্ব হবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন। নব্বইয়ে প্রতিশ্রুত স্থায়ী গণতান্ত্রিক ধারা চব্বিশে বাস্তবায়ন করতে হবে, যেখানে রাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোটাধিকার অবাধ ও সুরক্ষিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীই একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হবেন না। সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হবে দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও জনসেবামুখী। আইনের দ্বারা বেআইনি শাসন নয়, বরং প্রকৃত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার ও মর্যাদা ভোগ করবে। লুটপাট ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ জনকল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। সমাজ হবে দায় ও দরদের, যেখানে জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ণের শিকার হতে হবে না। রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে সমান গুরুত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

এই পুনর্গঠিত রাষ্ট্রই হবে দ্বিতীয় রিপাবলিক। এর মানে অতীতে সব গৌরবজনক ইতিহাস ও লড়াই-সংগ্রামকে অস্বীকার করা নয়। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও নব্বইয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক দায় চব্বিশের ওপর বর্তায়। একে স্রেফ ক্ষমতার হাতবদলে নামিয়ে আনলে তা হবে শহীদের রক্তের সঙ্গে চরম বেইমানি।

যাঁরা সংসদ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন, তাঁরা কেন গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তাবে ‘ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পাচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়। এনসিপি এমন নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্য দিয়ে নির্বাচিতরা প্রথমে সংবিধান প্রণয়ন অথবা সংস্কার করবেন। তারপর সেই প্রণীত বা সংস্কারকৃত সংবিধানের অধীন দেশ পরিচালনা করবে তথা সংসদ হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকবে। বিদ্যমান বাস্তবতায় এনসিপির এ প্রস্তাব ঐতিহাসিক। এর মাধ্যমে ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবিও পূরণ করা সম্ভব হবে। সংস্কার ও নির্বাচন উভয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের এর চেয়ে বাস্তবসম্মত ফর্মুলা আর হয় না। নতুন দাবি ও প্রস্তাবের মধ্যে ষড়যন্ত্র না খুঁজে নতুন দলের উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে হাজির থাকা মধ্যস্থতার সূত্র ধরে ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টিতে রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে আসবে, এমন প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।

সারোয়ার তুষার লেখক, গবেষক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি 

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ন ড র প বল ক ন র ব চ ত সরক র গণত ন ত র ক স ন শ চ ত কর ব যবস থ র ছ ত র জনত র ক ব যবস ষড়যন ত র ব এনপ র জনগণ র র র জন ক র কর নত ন দ এনস প ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন। 

ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।

এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
  • ‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক ষড়যন্ত্রকারীদের কফিনে শেষ পেরেক: প্রেস সচিব
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি
  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ