তারাবিহ পড়তে মসজিদে ঘরের পুরুষ সদস্যরা, নারীদের জিম্মি করে ডাকাতি
Published: 20th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি বাড়িতে তারাবিহর নামাজ চলার সময় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই সময় বাড়ির পুরুষ সদস্যরা মসজিদে ছিলেন। সশস্ত্র ব্যক্তিরা ঘরে ঢুকে বাড়ির নারীদের জিম্মি করে সোনা ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার রাত আটটায় উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের মিঠানলা গ্রামে জাহেদ চৌধুরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, এটি ডাকাতি নয়, চুরির ঘটনা।
ডাকাতির শিকার হওয়া পরিবারটির সদস্য জাহেদ চৌধুরী জানান, ‘গতকাল রাত আটটার দিকে তারাবিহর নামাজ পড়তে আমি ও আমার ছোট ভাই বাড়ির পাশের মসজিদে যাই। ঘরে আমার মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ছিলেন। এ সময় ৮ থেকে ১০ জনের মুখোশধারী লোক বাড়ির ছাদের সিঁড়িঘর দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমার মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে জিম্মি করে তাঁদের হাত-মুখ বেঁধে ঘরের তিনটি কক্ষের আলমারি ও অন্যান্য আসবাব ভাঙচুর করে। এ সময় তারা ঘরে থাকা নগদ ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
ডাকাতির ঘটনার পর ওই পরিবারের দুই নারী সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান পরিবারটির জ্যেষ্ঠ সন্তান জাহেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়া আমার মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে মিরসরাই উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠালেও মা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় লোকজনের কাছে জেনে রাত ১১টায় পুলিশ এসে খোঁজখবর নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি ডাকাতি নয়, চুরির ঘটনা।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।