ছত্তিশগড়ে সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য ও ১৮ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত
Published: 20th, March 2025 GMT
ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র মাওবাদীদের সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও অন্যরা মাওবাদী বিদ্রোহী। দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া ও বিজাপুর সীমান্তের জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ সংঘর্ষ হয়।
পৃথক ঘটনায় অবুঝমাড়ে নকশালপন্থীদের আইইডি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।
চলতি বছর ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৫ জনের মতো মাওবাদী বিদ্রোহী প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬৯ জন প্রাণ হারান বস্তার এলাকায়।দান্তেওয়াড়া সীমান্তের কাছে বিজাপুর জেলার গঙ্গালুর পুলিশ ফাঁড়ির অধীন এক জঙ্গলে সকাল ৭টার দিকে সংঘর্ষের ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে সেখানে মাওবাদী বিদ্রোহীদের উপস্থিতির তথ্য পেয়ে অভিযান চালান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বস্তার রেঞ্জের পুলিশ মহাপরিদর্শক সুন্দরাজ পি এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, দুপক্ষের মধ্যে থেমে থেমে কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সংঘর্ষের সময় গুলিতে বিজাপুর ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) এক সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৮ মাওবাদী বিদ্রোহীও। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান চলছে।
ইতিমধ্যে নারায়ণপুর জেলার অবুঝমাড় এলাকার জঙ্গলে দিবাগত রাত তিনটার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলার সময় কিছু বিদ্রোহী একটি আইইডির বিস্ফোরণ ঘটান। অবশ্য এতে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
দুপক্ষের মধ্যে থেমে থেমে কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে।সুন্দরাজ পি, বস্তার রেঞ্জের পুলিশ মহাপরিদর্শকনিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণে এক জওয়ান ও এক কর্মকর্তার চোখে ধুলো যায়। দুজনকেই ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা নিরাপদ আছেন।
চলতি বছর ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৫ জনের মতো মাওবাদী বিদ্রোহী প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৬৯ জন প্রাণ হারান বস্তার এলাকায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”
ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”
সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”
“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।