ইতিকাফের সময় কী করা যায় এ নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন আছে। ইতিকাফের সময় কোরআন পাঠ, গুরুত্বপূর্ণ সুরা–দোয়া–তাসবিহ মুখস্থ করা, দীর্ঘ সময় ধরে নামাজের অভ্যাস করা, মুসলিম মনীষীদের জীবনচরিত অধ্যয়ন, তাসবিহ, দরুদ শরিফ ইত্যাদি পাঠ ও আমল করা যায়। ইতিকাফকারীকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, কমিটির লোকজন এমনকি মুসল্লিদেরও সচেতন থাকা প্রয়োজন। গভীর রাতে দীর্ঘ সময় ধরে লম্বা কিরআতে তাহাজ্জুদ বা আমলে লিপ্ত থাকা এবং ইফতার, সাহরি ও প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর গভীর দোয়ায় লিপ্ত থাকা একান্ত প্রয়োজন।

আরও পড়ুনসুরা ইউসুফের সারকথা০১ এপ্রিল ২০২৩

পুরুষদের মসজিদে ইতিকাফ করতে হয়। নারীরা নির্দিষ্ট ঘরে বা নির্ধারিত কক্ষে ইতিকাফ করবেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন ও একান্ত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ওই ঘর বা কক্ষ থেকে বের হবেন না। অজু বা পাক-পবিত্রতার জন্য বাইরে বের হলে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন না বা সালাম বিনিময় করবেন না। কেউ সালাম দিলে তার জবাবও দেবেন না। তবে দরকার হলে ওই কক্ষের ভেতর থেকে বাইরের কাউকে ডাকতে পারবেন এবং কেউ ভেতরে এলে তাঁর সঙ্গে সালাম বিনিময় ও কথাবার্তা বলতে পারবেন। ইতিকাফের কক্ষে এমন কেউ অবস্থান করতে পারবেন, যাঁরা ইতিকাফ করছেন না। ইতিকাফ কক্ষটি যদি শয়নকক্ষে হয় এবং একই কক্ষে বা একই বিছানায় হয়, তবে অন্য যে কেউ অবস্থান করেন, তাতেও কোনো ক্ষতি নেই; এমনকি স্বামীও পাশে থাকতে পারবেন; তবে দাম্পত্য আচরণ ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ। এতে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। ইতিকাফের সময় ইবাদত-বন্দেগিই মুখ্য।

আরও পড়ুনতাহাজ্জুদ নামাজে ওঠার কৌশল১২ মার্চ ২০২৩

আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী–সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পার ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তার পর পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফ (সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যানে) থাক তখন স্ত্রী-সহবাস কোরো না। এ আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং এর ধারেকাছে যেয়ো না। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তার আয়াত স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

আরও পড়ুননামাজে দাঁড়িয়ে নানা চিন্তার আনাগোনা২২ জানুয়ারি ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য আল ল হ প রব ন অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই

শুরুতে উদাহরণ হিসেবে যেসব লক্ষণের কথা জানলেন, ব্রেন ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের শুরুতে একই রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সমস্যা হলো, এসব লক্ষণ আর সাধারণ মাথাব্যথা বা ক্লান্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা সত্যিই কঠিন।

দীর্ঘদিন ব্রেন ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের লরা স্ট্যান্ডেন। এই রোগে আক্রান্ত অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে—রোগীরা নিজেরা প্রথম দিকে এসব উপসর্গকে গুরুত্ব দেননি।
এমনকি চিকিৎসকেরাও অনেক সময় ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছেন। ফলে রোগ শনাক্ত হতে দেরি হয়ে গেছে।

আর এই দেরি কিন্তু মারাত্মক। কারণ, ক্যানসার যত দেরিতে ধরা পড়ে, চিকিৎসাও তত জটিল ও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।

আসল সমস্যা হলো মস্তিষ্কের ক্যানসারের উপসর্গ অনেকটা আমাদের দৈনন্দিন সমস্যার মতোই। ক্লান্তি, মানসিক চাপ, মাইগ্রেন, এমনকি মেনোপজের সময়ের সমস্যার সঙ্গেও এর মিল আছে।

আবার অনেক সাধারণ রোগের লক্ষণও প্রায় একই রকম। যেমন দুশ্চিন্তা, সাইনাসের সমস্যা বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা।

যখন লক্ষণগুলো অস্পষ্ট আর হালকা থাকে, তখন সেসব উপেক্ষা করা সহজ হয়ে যায়। নিজের মনেই নানা যুক্তি খুঁজে নিই আমরা। তাই অনেকে অপেক্ষা করেন আর ভাবেন, দেখা যাক, সমস্যাটা কত দূর গড়ায়।

অনেকে ব্রেন ক্যানসার হওয়ার দুই-তিন মাস আগে থেকেই লক্ষণ টের পান। কিন্তু সাধারণ সমস্যা ভেবে তা উড়িয়ে দেন। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়।

এবার জেনে নিই সেই ৭টি সমস্যা সম্পর্কে, যেসব আমরা সাধারণ সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণের মধ্যে একটা বা দুটো থাকলেই যে কারও ব্রেন ক্যানসার হয়েছে, তা কিন্তু নয়। তবে কোনো সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে কিংবা একদম অস্বাভাবিক মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনরাতের এই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্ক যেভাবে দ্রুত বুড়িয়ে যায়১১ নভেম্বর ২০২৪১. কথা খুঁজে না পাওয়া

অনেকে হঠাৎ করে নির্দিষ্ট শব্দ মনে করতে পারেন না। পুরো বাক্য বলতে গেলে আটকে যান। কথোপকথনে অংশ নিতে গেলে একটু দেরি হয়।

শব্দ খুঁজে না পাওয়ার সমস্যা অবশ্য ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণেও হতে পারে। কিন্তু যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকে, কিংবা হঠাৎ করে শুরু হয়, তাহলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার।

২. মানসিক ধোঁয়াশা

অনেকের মনে হয়, যেন মাথার ভেতর কুয়াশা জমে আছে। মনোযোগ দিতে পারছেন না, পরিষ্কার করে ভাবতে পারছেন না, কিছু মনে থাকছে না। ফলে রোগ ধরা পড়তে আরও দেরি হয়ে যায়।

এই মাথার ঘোলাটে ভাব অবশ্য অনেক কারণেই হতে পারে। মেনোপজ, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া কিংবা মানসিক চাপ। কিন্তু যদি এই ঘোলাটে ভাবের সঙ্গে আরও কিছু স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন কথা বলতে বা দেখতে সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তনও ব্রেন ক্যানসারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই