ফতুল্লায় একটি মসজিদের খতিবকে অপসারণ করাকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় দু'পক্ষের লোকজন চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি সহ একে অপরকে হাতুড়িপেটা করেন।

এতে খতিব সহ ছয়জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে ফতুল্লার ভুঁইগড় রূপায়ন টাউন জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে মসজিদের ভেতরে সংঘর্ষ ও হাতুড়িপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

রূপায়ন টাউনের বাসিন্দারা জানান, মসজিদের খতিব মাওলানা জামাল উদ্দিন বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তৎকালিন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর থেকে তিনি খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

স¤প্রতি স্থানীয় বিএনপির দলীয় লোকজন নতুন করে মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন করেন এবং জামাল উদ্দিনকে অপসারণ করে নতুন খতিব নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। 

তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত দশটায় তারাবির নামাজ শেষে নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ খতিব জামাল উদ্দিনকে অপসারণের চিঠি দিলে পুরাতন কমিটির লোকজন এর প্রতিবাদ করেন। এসময় নতুন কমিটির লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাদের উপর হামলা করলে দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। 

এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন মসজিদের ভেতরে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি সহ একে অপরকে হাতুড়িপেটা করেন। মসজিদের দরজা জানালা ভাংচুরও করা হয়। এসময় নারী সহ বেশ কয়েকজন মুসুল্লি মিলে সংঘর্ষ থামানো চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

এ ঘটনায় মসজিদের খতিব জামাল উদ্দিন সহ ছয়জন আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে জুম্মার নামাজের পরে আহতরা এ ঘটনার বিচার দাবি করলে মসজিদে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ গিয়ে দু'পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। 

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করি।

এ ঘটনায় দু'পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে বিষয়টি সমাধানের পর্যায়ে আছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে মুসুল্লিদের একটি অংশ জানান, বিগত ১২ বছর যাবত রূপায়ণ টাউন মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা জামাল উদ্দিন। খতিব জামাল উদ্দিন রুপায়ণের উপদেষ্টা সাবেক কৃষকলীগ নেতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নাজিম উদ্দীন চেয়ারম্যানের সাথে আতাত করে দীর্ঘদিন খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য ও ভুমিকা থাকার পরেও নাজিম চেয়ারম্যান এর সাথে সখ্যতা থাকার সুবাদে অনায়াসে খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। 


সাধারণ মুসল্লিদের অভিযোগ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর নাজিম উদ্দীন চেয়ারম্যান পালিয়ে গেলে খতিবও লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। ৫ মাস পর হঠাৎ গত ১৪ মার্চ শুক্রবার কাউকে মুসল্লীদের না জানিয়ে আবার নামাজ পড়াতে আসেন। মুসল্লীরা তার এমন আচরণ মেনে নিতে পারেনি। তার বিতর্কিত ভুমিকার জন্য তার অপসারণ দাবী করে সাধারণ মুসল্লিরা। তারই ধারাবাহিকতায় মসজিদ কমিটি তাকে সন্মানের সহিত অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির এই সিদ্ধান্ত খতিব আঁচ করতে পেরে গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতেই রুপায়ণ টাউনে চলে আসে দাওয়াতের নাম করে। সাধারণ মুসল্লি ও কমিটির পক্ষে অপসারণের বিষয়টি অবহিত করতে গেলে খতিব নিজেই উস্কানীমূলক কথা বলে এবং সাথে থাকা স্বৈরাচারের দোসর নাজিম চেয়ারম্যান এর অনুগত লোকজন এবং আজমেরী ওসমানের ক্যাডার রাজ কামরুজ্জামান সহ অন্যন্য কিছু লোক মিলে  উপদেষ্টা জহিরুল ইসলামের উপর চড়াও হয় এবং তাকে লাঞ্চিত করে। একপর্যায়ে বেধড়ক মারধর করে। জহিরুল ইসলামের চিৎকারে প্রথমে এগিয়ে আসেন রুপায়ণের বাসিন্দা আবু সাইদ পাটোয়ারী রাসেল। তাকেও মারধর করে হামলাকারীরা। পরে শত শত মুসল্লিরা এগিয়ে আসলে খতিব জামাল উদ্দিন তার পালিত লোকজন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আজমেরীর ক্যাডার রাজ, কামরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম মামুনের  নাম উল্লেখ করে এবং  অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে করে ফতুল্লা থানায় হত্যা চেস্টার অভিযোগ দেয়।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ মসজ দ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। 

এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন।  সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল

সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। 

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে সাংবাদিকের ছেলে ছুরিকাহত
  • উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন