সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা ও একজন ঘুমধুমের বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ভাজাবনিয়া সীমান্তের মিয়ানমার অংশে এ ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা এ গুলি চালিয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে ঘুমধুমের উলুবনিয়া গ্রামের নুরুল কবিরের ছেলে মো.

জাহাঙ্গীর (১৯) ও ভাজাবনিয়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গা আবদুল হাকিমের ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন (২৭) আহত হয়েছেন। আহত জাহাঙ্গীর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ হোসাইনকে প্রথমে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় লোকজন ও ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মিয়ানমার থেকে পাচারকারীদের বাহকেরা গরু আনার জন্য যাওয়ার সময় আরাকান আর্মি গুলি ছোড়ে। তখন গুলিতে দুজন আহত হন।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল করিম জানিয়েছেন, ভাজাবনিয়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের একটি সীমান্ত পোস্ট রয়েছে। পোস্টটি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে। গত রাতে ৩৪ ও ৩৫ সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় সাত-আটটি গুলি ছোড়া হয়। ওই ছোড়া গুলিতে শূন্যরেখা থেকে ২০০ মিটার পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একজন বাংলাদেশি ও একজন রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তের রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের গতিবিধির ওপর নগর রাখছে আরাকান আর্মি (এএ)। সন্দেহ হওয়ায় তারা গুলি চালিয়েছে। এই ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন