‘সিয়াম, বুবলীর রসায়ন পুরাই মধু মধু’
Published: 22nd, March 2025 GMT
ঈদ সামনে রেখে নতুন সিনেমা প্রচারে একে একে টিজার ও গান প্রকাশিত হচ্ছে। এই ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এম. রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমা। এতে জুটি বেঁধেছেন শবনম বুবলী ও সিয়াম আহমেদ। এই জুটির ‘বন্ধুগো শোনো’ শিরোনামের গানটি টাইগার মিডিয়ার ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার বিকালে। ‘এ আমার কি হলো/পাগল পাগল লাগে/হাওয়া এসে জানিয়ে দিলো এমনতো হয়নি আগে’—এমন কথামালায় সাজানো গানে দর্শক বুঁদ হয়েছেন, আর মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন এই জুটির রসায়ন দেখে। কেউ কেউ সিয়াম, বুবলী জুটিকে সালমান শাহ, শাবনূর জুটির সঙ্গে তুলনা করছেন। রোমান্টিক ঘরানার এই গানটির কথা ও সুর করেছেন প্রিন্স মাহমুদ। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান মাহমুদুল ও দিলশাদ নাহার কনা।
কেউ লিখেছেন, ‘‘লোকেশন, মিউজিক, লিরিক্স,গায়ক,গায়িকা,অভিনয় সব কিছু মিলে অসাধারণ।’’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘‘এই ঈদে মুক্তি পাওয়া সবচেয়ে সেরা গান,ভালোবাসা ইমরান-কনা, সিয়াম-বুবলী।’’
আরো পড়ুন:
কার বায়োপিকে অভিনয় করতে চান শাকিব খান
এবার একসঙ্গে মৌ, তিশা ও বুবলী
সজীব দে নামের একজন লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, এন্ড্রু কিশোর আর কনকচাঁপার কণ্ঠে ঠোঁট মিলিয়েছে সালমান শাহ, শাবনূর’’।
শ্রাবণ আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘‘পুরাই মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিয়েছে বুবলি সিয়াম। গানের কথা, গায়কী, সুর লোকেশন, ২ জনের কম্বিনেশন জমে ক্ষীর।’’
এই গানের স্রষ্টা প্রিন্স মাহমুদকে নিয়ে একজন লিখেছেন, ‘‘প্রিন্স মাহমুদের গানে আলাদা শান্তি লাগে’’ এর পর একটি হার্ট সাইন যুক্ত করে দিয়েছেন তিনি।
দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে জংলি সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র সিয়াম আহমেদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বন্ধুগো শোনো’ ভালোবাসা কুড়াচ্ছে দর্শকের। এই ভালোবাসা অকল্পনীয়, এই ভালোবাসা মায়াময়।’’
উল্লেখ্য, সিয়াম-বুবলী ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন— প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, সোহেল খান, দিলারা জামান, রাশেদ মামুন অপু, শহীদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫