কটিয়াদীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত
Published: 22nd, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদলের স্থানীয় এক নেতা নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আশিক খান (২২) মুমুরদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মালদ্বীপপ্রবাসী। তাঁর বাড়ি ইউনিয়নের চাতল গ্রামে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলী হায়দার ও আবদুল হান্নান সরকার নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে দেড় যুগ ধরে একাধিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দন এবং উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আশিকুজ্জামান নজরুল পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে স্থানীয় তিনজনের প্রস্তাব করে বোর্ডে পাঠান। নামের সিরিয়াল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বেলা দুইটার দিকে ঢাকা বোর্ডের একটি দল তদন্ত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে আসে। এই তথ্য উভয় পক্ষ আগ থেকে জানত। এ নিয়ে উভয় পক্ষের কয়েক শ লোক সকাল থেকে কলেজের আশপাশে অবস্থান নেন। তদন্ত চলার একপর্যায়ে নুরুজ্জামান চন্দন ও আশিকুজ্জামান নজরুল পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দায়ের কোপে ছাত্রদল নেতা আশিক খান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন গুরুতর আহত হন। দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে আশিক মারা যান। গুরুতর আহত হেমায়েত হোসেনকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা আশিকের লাশ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ করেন এবং থানায় গিয়ে বিচার দাবি করেন। নিহত আশিক হলেন নুরুজ্জামান চন্দন পক্ষের।
হোসেনপুর-কটিয়াদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।