নোয়াখালীর হাতিয়ার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অস্ত্রের মুখে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৫) বাড়ি থেকে অপহরণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার রাতে নিঝুম দ্বীপ শতফুল বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরিফ হোসেন উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. সাহেদের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার রাতে মুখোশধারী কয়েকজন যুবক এসে মাদ্রাসাছাত্রীদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে মেয়ের মা ও স্বজনদের পিটিয়ে আহত করা হয়। অপহরণকারীরা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে মেয়ের স্বজনদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন এবং অপহরণকারীদের তাড়া করলে তারা মেয়েটিকে স্থানীয় খালপাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। 

এলাকাবাসীর ভাষ্য, ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিএনপি নেতা সাহেদ। মেয়ের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বিএনপি নেতার ছেলে ও তার সহযোগীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। 

এদিকে ঘটনার পরপরই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আরিফের বাবা সাহেদ, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার মেম্বার, যুবদলের সভাপতি আশ্রাফসহ বিএনপির একটি দল ভুক্তভোগী মেয়ের বাড়িতে যান। তারা এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। 

ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার মেম্বার বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এটা দলের জন্য লজ্জার। 

ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা বলেন, তার মেয়ে এখনো অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। রাতে ডাক্তার এনে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর মেয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তিনি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। ঘটনার রাত থেকে তাকে শুধু হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। 

বিষয়টি দুঃখজনক অভিহিত করে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো.

সাহেদ বলেন, ওই মেয়ের বাড়ি ও তাঁর বাড়ি কাছাকাছি। মেয়ের পরিবারের সঙ্গে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। তিনি খবর পেয়ে মেয়েকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। 

হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। মেয়েটিকে অপহরণ করার চেষ্টা করেছিল। মেয়েটি বর্তমানে তার নিজ বাড়িতে আছে। ভুক্তভোগী মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ ব য় র প রস ত ব পর ব র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের টেকনাফে ফসলি জমি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণ হওয়া কৃষক মো. ফরিদ উল্লাহ (৪৩) মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের কোনারপাড়া এলাকায় তাঁকে ছেড়ে দেন অপহরণকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অভিযানের মুখে অপহরণকারীরা ফরিদ উল্লাহকে ছেড়ে দিয়েছেন। ফরিদকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র, গুলিসহ এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. রিদুয়ান (২০)। তিনি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামারী এলাকার আবদুস সালামের ছেলে। গত শনিবার রাতে মো. ফরিদ উল্লাহকে অপহরণ করা হয়। তিনি হ্নীলা ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীখালী এলাকার মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে।

পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকায় ফসলি খেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ফরিদ উল্লাহ। এ সময় তাঁকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাশের পাহাড়ে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। রাতে ঘটনাটি ফরিদের পরিবার থেকে পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযানে যায়। পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ফরিদকে ছেড়ে দিয়ে পালাচ্ছিলেন অপহরণকারীরা। এ সময় ধাওয়া দিয়ে একটি বন্দুক, চারটি গুলিসহ মো. রিদুয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রিদুয়ান চিহ্নিত মাদক কারবারি। এর পাশাপাশি অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেও তাঁর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অপহরণের ঘটনায় ভুক্তভোগী ফরিদের স্ত্রী বাদী হয়ে রিদুয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। রিদুয়ানকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। উদ্ধার হওয়া ফরিদ পুলিশি হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগারগাঁওয়ে সেনা অভিযানে অপহৃত ৪ কিশোর উদ্ধার
  • অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র ও গুলিসহ অপহরণকারী আটক
  • ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার