বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণচেষ্টা
Published: 23rd, March 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়ার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অস্ত্রের মুখে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৫) বাড়ি থেকে অপহরণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার রাতে নিঝুম দ্বীপ শতফুল বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরিফ হোসেন উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. সাহেদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার রাতে মুখোশধারী কয়েকজন যুবক এসে মাদ্রাসাছাত্রীদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে মেয়ের মা ও স্বজনদের পিটিয়ে আহত করা হয়। অপহরণকারীরা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে মেয়ের স্বজনদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন এবং অপহরণকারীদের তাড়া করলে তারা মেয়েটিকে স্থানীয় খালপাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিএনপি নেতা সাহেদ। মেয়ের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বিএনপি নেতার ছেলে ও তার সহযোগীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আরিফের বাবা সাহেদ, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার মেম্বার, যুবদলের সভাপতি আশ্রাফসহ বিএনপির একটি দল ভুক্তভোগী মেয়ের বাড়িতে যান। তারা এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার মেম্বার বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। এটা দলের জন্য লজ্জার।
ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা বলেন, তার মেয়ে এখনো অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। রাতে ডাক্তার এনে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর মেয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তিনি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। ঘটনার রাত থেকে তাকে শুধু হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বিষয়টি দুঃখজনক অভিহিত করে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো.
হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। মেয়েটিকে অপহরণ করার চেষ্টা করেছিল। মেয়েটি বর্তমানে তার নিজ বাড়িতে আছে। ভুক্তভোগী মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ ব য় র প রস ত ব পর ব র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’