রোনালদোর পেনাল্টি মিসের পর গোল, ইউরোপে থ্রিলারের রাত
Published: 24th, March 2025 GMT
আগের ম্যাচে গোল করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সামনে তাঁর মতো উদ্যাপন করে আলোচনায় এসেছিলেন ডেনমার্কের তরুণ স্ট্রাইকার রাসমুস হয়লুন্দ। তবে অপমান বা অসম্মান থেকে নয়, ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড তাঁর ‘আইডল’ রোনালদোকেই অনুকরণ করেছিলেন সে দিন।
প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের এই উদ্যাপনকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন রোনালদো। পাশাপাশি একই উদ্যাপন হয়লুন্দের সামনে নিজেও করতে চাওয়ার কথা জানান পর্তুগিজ মহাতারকা। নাটকীয় এক লড়াইয়ে গতকাল রাতে নিজের সে কথা রেখেছেন রোনালদো। সেই একই উদ্যাপন হয়লুন্দকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কথা রেখে নায়ক হয়ে ওঠার এই ম্যাচে খলনায়কও হতে পারতেন রোনালদো। ডেনমার্কের বিপক্ষে উয়েফা নেশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল পর্তুগাল। গতকাল লিসবনে দ্বিতীয় লেগের লড়াইয়ে ৬ষ্ঠ মিনিটে পেনাল্টিতে দলকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ এসেছিল রোনালদোর সামনে। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ‘সিআর সেভেন’।
পেনাল্টি মিস করে হতাশায় ভাসান সবাইকে। তবে পর্তুগাল যখন দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ গোলে পিছিয়ে, তখনই নিজের দায় শোধ করেন রোনালদো। ম্যাচের ৭২ মিনিটে তাঁর দারুণ এক গোলে দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ গোলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। আর ক্যারিয়ারের ৯২৯তম গোলটির পরই হয়লুন্দকে জবাব দেন ‘সিউ’ উদ্যাপনে।
আরও পড়ুনভক্তের মুখের ওপর উদ্যাপন করতে চান রোনালদো ১২ ঘণ্টা আগেরোনালদোর গোল ও উদ্যাপনেই অবশ্য শেষ হয়ে যায়নি সব নাটকীয়তা। বরং শেষ দিকে রীতিমতো থ্রিলারে পরিণত হয় এই লড়াই। যেখানে শেষ পর্যন্ত পর্তুগাল ম্যাচ জিতেছে ৫-২ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে)।
লিসবনে রোনালদোর পেনাল্টি মিসের পর ৩৮ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। এই গোলের পর দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ সমতা আসে লড়াইয়ে। এরপর ৫৬ মিনিটে ডেনমার্ককে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন রাসমুস ক্রিস্টিনসেন। যা পর্তুগালের পক্ষে সমতায় নেন রোনালদো।
গোলের পর রোনালদো.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ত গ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।