অপরাধের সংখ্যা কমেছে বেড়েছে হত্যা ডাকাতি
Published: 24th, March 2025 GMT
গত বছরের ৫ আগস্টের পরের ছয় মাসে ৪ হাজার ৩৯৮টি অপরাধ কম সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ, অপহরণ, চুরি, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের মতো ঘটনা রয়েছে। তবে আগের ছয় মাসের তুলনায় এ সময় হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতা ও সিঁধেল চুরি বেড়েছে। রাজশাহী বিভাগের আট জেলার চিত্র এটি।
গত এক বছরে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে পুলিশের তৈরি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৩ হাজার ২১৬টি অপরাধ হয়েছে। পরের ছয় মাসে অপরাধ হয়েছে ৮ হাজার ৮১৮টি। ৫ আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৫০টি হত্যা, সাতটি ডাকাতি, ৫৭টি দস্যুতা, ৯১৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ৩২৩টি ধর্ষণ ও ২৯টি অপহরণ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ ৩৩টি, সিঁধেল চুরি ৩৯টি, চুরি ৪৭১টি, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার হয় ৬ হাজার ২২২টি।
৫ আগস্টের পরের ছয় মাসে (আগস্ট থেকে জানুয়ারি) ২৪১টি হত্যা, ২০টি ডাকাতি, ৬৪টি দস্যুতা, ৮১৮টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ২৪৯টি ধর্ষণ ও ২০টি অপহরণ হয়। এ সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ ৯টি, সিঁধেল চুরি ৪৭টি, চুরি ৩৮৪টি, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার মামলা হয় ২ হাজার ৭৯৮টি।
বেড়েছে হত্যাকাণ্ড
আগস্টের আগের ছয় মাসে ১৫০ জন খুন হলেও পরের ছয় মাসে খুন হন ২৪১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭২ জন খুন হন আগস্টে। সেপ্টেম্বরে ৪৬ জন, অক্টোবরে ২৯ জন, নভেম্বরে ৪১ জন, ডিসেম্বরে ৩১ জন ও জানুয়ারিতে খুন হন ২২ জন।
গত ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানায় ১৫ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই দিন সিরাজগঞ্জে ৩০ জন নিহত হন। ৫ আগস্ট ১১ জন নিহত হন। ৪ আগস্ট পাবনায় দু’জন ছাত্র নিহত হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ আগস্টের পর তিনজন খুন হয়েছেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কিশোর দলের হাতে খুন হন মাসুদ রানা ও রায়হান আলী।
বেড়েছে ডাকাতি
আগের সাতটির স্থলে পরের ছয় মাসে ২০টি ডাকাতি ঘটেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীগামী রোড রয়েলস বাসে ডাকাতি হয়। সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অন্তত ৪০ যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নেয়। ৪ ফেব্রুয়ারি মোহনপুর মিরাকেল ওয়াটার পার্কে ডাকাতরা ৩৮ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে। ২৭ জানুয়ারি গোদাগাড়ীর গোগ্রামের প্যারাডাইস রাইস মিলে ডাকাতি হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়ার বিড়ালদহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা.
গত ডিসেম্বরে নাটোর শহরের মীরপাড়ায় দুটি হিন্দু বাড়িতে ডাকাতি ঘটেছে। ২৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার নেওয়ারগাছায় ঠিকাদার অনু খানের বাড়িতে ১০-১২ মুখোশধারী ডাকাত ২৫ ভরি সোনার গহনা, ২ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল ফোন নেয়। ২৮ নভেম্বর বাঁখুয়া মহল্লার রফিকুল ইসলাম রতনের গুদামের তালা ভেঙে ডাকাতরা ১৫ লাখ টাকার সরিষা ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়। ৩০ ডিসেম্বর কামারখন্দে গরুবোঝাই ট্রাক ডাকাতের কবলে পড়ে। গত ১২ ডিসেম্বর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উল্লাপাড়া এজেন্ট শাখার দুই কর্মীর ২৮ লাখ টাকা লুট হয়। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুটি ও নওগাঁয় তিনটি ডাকাতি ঘটেছে।
রাজশাহী রেঞ্জ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘অপরাধীরা কৌশল বদলে ডাকাতি, হত্যা, দস্যুতা, সিঁধেল চুরির মতো অপরাধ করছে। ডাকাতদের আবাস মূলত বগুড়া, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে। আরেকটি আবাস গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে পুলিশ দুই শিফটে পাহারা দিচ্ছি। আশা করছি, ডাকাতি নিয়ন্ত্রণ হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৫ আগস ট র পর পর র ছয় ম স ড স ম বর ম লপত র খ ন হন অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।