বগুড়া থেকে দুই তরুণকে অপহরণের পর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একজন উপপরিদর্শকসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোরের দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বীরগ্রাম এলাকায় হাইওয়ের কুন্দারহাট থানা-পুলিশের একটি দল মাইক্রোবাস থামিয়ে ডিবির ওই পাঁচ সদস্য ও গাড়িচালককে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা, ডিবির পোশাক ও পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক শামিম মো.

অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম, বশির আলী এবং মাইক্রোবাসচালক মেহেদী হাসান। তাঁদের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় অপহরণের মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়ার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. শহিদ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পুলিশের বেতার বার্তা পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের নৈশকালীন টহল দল বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের কুন্দারহাট থানা এলাকায় একটি মাইক্রোবাস থামিয়ে ছয়জনকে আটক করে। এর মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচজন নিজেদের রাজশাহী মহানগর ডিবির সদস্য পরিচয় দেন। অন্যজন মাইক্রোবাসচালক। তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ রয়েছে, তা বগুড়া জেলা পুলিশ নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে। আটক ডিবির পাঁচ সদস্যসহ ছয়জনকে ধুনট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা প্রথম আলোকে বলেন, ফ্রিল্যান্সার পেশায় জড়িত রাব্বী ও জাহাঙ্গীর নামে বগুড়ার ধুনট উপজেলার দুই তরুণের অভিযোগ, রাজশাহী মহানগর ডিবিতে কর্মরত ধুনট উপজেলার আবদুল ওহাবের মদদে ডিবির একটি দল রোববার রাতে তাঁদের অপহরণ করে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে দুই তরুণকে পথিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে অপহরণকারী দলের সদস্যরা মাইক্রোবাসে করে বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক হয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে তথ্য পেয়ে জেলা পুলিশ হাইওয়ের কুন্দারহাট থানা-পুলিশকে জানায়। পরে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা-পুলিশ একটি মাইক্রোবাস আটক করে। ওই মাইক্রোবাসে থাকা পাঁচজন নিজেদের রাজশাহী মহানগর ডিবির সদস্য পরিচয় দেন। অন্যজন মাইক্রোবাসচালক। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে আটক ব্যক্তিদের ধুনট থানায় নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আটক পাঁচ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বগুড়ায় আটক পাঁচজনের একজন আরএমপি ডিবির একজন উপপরিদর্শক। চারজন কনস্টেবল। ডিবির ওই সদস্যরা কাউকে না জানিয়েই বগুড়ায় অভিযানে গিয়েছিলেন। সাধারণত কোথাও অভিযানে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হয়। তাঁরা নেননি। এ কারণে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বগুড়ায় গিয়েছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ সদস য হ ইওয়

এছাড়াও পড়ুন:

বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক

বাঙালি মুসলমান নারীজাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের ফেসবুক পোস্টের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এমন মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।

আজ বৃহস্পতিবার আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজসংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দিয়েছেন। এ ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলা ও বাঙালি নারীজাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি; তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। আমাদের মনে রাখতে হবে, বেগম রোকেয়ার শিক্ষা ও সামাজিক আন্দোলন ধর্ম, বর্ণ, জাতিনির্বিশেষে বাঙালি নারীদের পরাধীনতা ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা ও প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়, যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দৃঢ়ভাবে বলতে চায়, বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে আমাদের সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।

আরও পড়ুনবেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
  • লিবিয়ায় তিন বাংলাদেশিকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি
  • ৭ বছরের শিশুর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা, পাঁচ দিন পর বাবার বুকে ফিরল শিশুটি
  • পুরান ঢাকায় ছুরিকাঘাতে কারখানার শ্রমিক হত্যায় যুবকের স্বীকারোক্তি