ব্যান্ডউইডথের দাম কমানোর সুবিধা গ্রাহক কতটা পাবেন
Published: 25th, March 2025 GMT
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি তার সব ধরনের সেবার ক্ষেত্রে দাম কমিয়েছে ১০ শতাংশ। তারা বলছে, এতে দেশে ইন্টারনেট–সেবার দাম কমে আসবে। টেলিকম খাতের বিভিন্ন অপারেটর বলছে, এই সিদ্ধান্তের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ধীরে ধীরে ইন্টারনেটের দাম কমে আসতে পারে। তবে সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি থেকে ব্যান্ডউইডথ নেওয়া অপারেটররা বলছে, গ্রাহক পর্যায়ে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।
গত শনিবার কোম্পানির বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইআইজি) পর্যায়ে সব ব্যান্ডউইডথের জন্য দাম ১০ শতাংশ কমে আসবে। এই সিদ্ধান্ত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
গ্রাহক যে পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ পেয়ে থাকেন, সেখানে ভলিউম হয়তো কিছু বাড়তে পারে। আর দামের প্রভাব মূলত বড় প্যাকেজের ওপর পড়তে পারে। ইমদাদুল হক, সভাপতি, আইএসপিএবিসরকারি প্রতিষ্ঠান তো দাম কমাল, কিন্তু গ্রাহক এর সুবিধা কতটা পাবেন, ইন্টারেনেটের দাম আসলেই কমে আসবে কি না—এসব নিয়ে আইআইজি, আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে কথা হয়।
বাংলাদেশে ব্যান্ডউইডথ আসে দুইভাবে। সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি সমুদ্রপথে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করে। আর ইন্টারন্যাশনাল টেলিস্ট্রেরিয়াল কেব্ল (আইটিসি) ভারত থেকে আমদানি হয়। দেশে মাসে ব্যান্ডউইডথ চাহিদা ৬ হাজার জিবিপিএস। যার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ আসে আইটিসির মাধ্যমে। বাকিটা সাবমেরিন হয়ে। তবে সরকার মার্চ থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি আইটিসির জন্য ৫০ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে।
সাবমেরিন বা আইটিসি থেকে ব্যান্ডউইডথ নিয়ে থাকে আইআইজি অপারেটররা। যাদের কাছ থেকে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইল অপারেটররা ব্যান্ডউইডথ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সেবা দেয়; অর্থাৎ সাবমেরিন কেব্লের ১০ শতাংশ দাম কমার প্রভাব সরাসরি আইআইজির কাছে যাবে। বিষয়টি নিয়ে আইআইজিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, লাস্ট মাইল গ্রাহক এ সুবিধা পাবেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাবমেরিন কেব্লের ব্যান্ডউইডথ ভলিউমের ভেদে প্রতি এমবিপিএস ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করে, যা আইটিসি নেয় ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আবার সরকারের নতুন নীতি অনুযায়ী সাবমেরিনের ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার বাড়বে; অর্থাৎ বেশি দামে এখন তাদের ব্যান্ডউইডথ কিনতে হবে সাবমেরিন থেকে।
আইআইজিরা বলছেন, তাঁদের সব খরচের মাত্র ১০ শতাংশ যায় ব্যান্ডউইডথের পেছনে। ফলে সার্বিক দিক থেকে দাম না কমালে এবং সরকারের ভ্যাট–ট্যাক্স নীতির পরিবর্তন না হলে গ্রাহক পর্যায়ে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।
সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
দেশের ইন্টারনেট গ্রাহক সবচেয়ে বেশি মুঠোফোন অপারেটরে। সাবমেরিনের দাম কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহক এর সুফল পাবেন। যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দাম কমার বিষয়টি আইআইজি পর্যায় থেকে হলে তা গ্রাহকের ওপর প্রভাব পড়বে বলে জানান আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহক যে পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ পেয়ে থাকেন, সেখানে ভলিউম হয়তো কিছু বাড়তে পারে। আর দামের প্রভাব মূলত বড় প্যাকেজের ওপর পড়তে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক র দ ম কম গ র হক এ ইন ট র সরক র র ওপর আইট স
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটির পাহাড়ে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনা অভিযান
রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে চালানো এই অভিযানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। অভিযান এখনো চলছে।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে তৎকালীন সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বহু ধারার উল্লেখ ছিল—এর কিছু বাস্তবায়ন করা হয়, আর বাকিগুলোর বাস্তবায়নের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অভিযোগ, চুক্তির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এই চুক্তির বিরোধিতা করেই ১৯৯৮ সালের জুনে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। সংগঠনটি মূলত চুক্তিবিরোধী অবস্থান নিয়ে পাহাড়ি তরুণদের মধ্যে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।
এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। দুই সংগঠনের সংঘর্ষে বিভিন্ন সময়ে বহু কর্মী নিহত হন, আর সশস্ত্র সহিংসতায় পাহাড়জুড়ে বিরাজ করে আতঙ্ক।
২০১০ সালে জেএসএসের মূল ধারা (সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন) থেকে একটি অংশ বেরিয়ে এসে জেএসএস (এম এন লারমা) নামে নতুন একটি সংগঠন গঠন করে।
পরে ২০১৭ সালে ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের পর প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে আরেকটি অংশ ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নামে আত্মপ্রকাশ করে।
ঢাকা/হাসান/ইভা