১২ পোশাক কারখানার মালিকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা সরকারের
Published: 25th, March 2025 GMT
শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না করায় ১২টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাঁরা বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না।
রাজধানীর সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আজ থেকেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।
পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান, মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান, টিএনজেড গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান, স্টাইলক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেড এবং রোর ফ্যাশনের মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
শ্রম উপদেষ্টা জানান, বৃহস্পতিবারের (২৭ মার্চ) মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের নির্দেশনা রয়েছে। তবে ১২টি কারখানা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যেসব কারখানা নির্ধারিত সময়ে বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলোর মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে। এই মালিকদের বিদেশ ভ্রমণে সমস্যা হয় না, বাড়ি-গাড়ি করতেও সমস্যা নেই। অথচ শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের সময় তাঁরা নানা সমস্যা দেখান।’
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবারের পর বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, তাদের বিরুদ্ধেও সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কর্মকর্তারা জানান, গত ২৪ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ভালুকার কারখানা লে–অফ করে রোর ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ। কারখানাটির ১ হাজার ৩৭৬ শ্রমিক জানুয়ারি মাসের বেতন ও লে–অফের ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ ছাড়া নভেম্বর–ডিসেম্বরে বেতন–ভাতা বাবদ শ্রমিকের পাওনা আছে ৭০ লাখ টাকা। দাবি আদায়ে কারখানার শ্রমিকেরা চলতি সপ্তাহে উত্তরায় বিজিএমইএ ভবন অবরুদ্ধ করেন। এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুল ইসলাম।
এদিকে বিভিন্ন সংকটে পড়ে গাজীপুরের চন্দ্রায় মাহমুদ গ্রুপের দুটি কারখানা গত বছরের শেষ দিকে বন্ধ হয়। শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ এখনো বাকি। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিনুল ইসলাম।
গাজীপুরের স্টাইলক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকেরা বকেয়া পাওনা আদায়ে গত রোববার শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হয়ে রাম প্রসাদ সিং (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস আলমাস রহমান। এদিকে সাভারের হেমায়েতপুরে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ডার্ড গ্রুপের চারটি কারখানা বন্ধ হয়। সেই কারখানার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ এখনো বাকি আছে। ডার্ড গ্রুপের মালিকানায় আছেন ইতিমাদ উদ দৌলা ও নাবিল উদ দৌলা। এ ছাড়া গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের কারখানার গত ফেব্রুয়ারির বেতন ও ঈদ বোনাস বাকি। এই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহদাৎ হোসেন শামীম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।