দীঘিনালায় ১৮ দিনের ব্যবধানে আবারও অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল ১৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
Published: 26th, March 2025 GMT
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজারে ১৮ দিনের ব্যবধানে দোকানে আবারও আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাজারের একটি কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৬ ইউনিট প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয়রা অংশ নেয়।
বোয়ালখালী নতুন বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.
ফায়ার সার্ভিসের খাগড়াছড়ি স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি জানতে কাজ চলছে।
এদিকে, চলতি মাসের ৮ মার্চ রাতে দীঘিনালার বোয়ালখালীর লারমা স্কয়ার বাজারে আগুনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ১৮ দিনের মাথায় আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।