জেলজীবনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন রিয়া
Published: 26th, March 2025 GMT
২০২০ সালে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তাঁর প্রেমিকা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধে খুন ও মাদকের মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রায় ১ মাসের মতো সময় জেলে কাটিয়েছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জেল জীবনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কতটা । পাশাপাশি, ২৭ দিন কারাবন্দি থাকার সেই অভিজ্ঞতাকে অন্য এক পৃথিবীর সঙ্গে তুলনা করেছেন অভিনেত্রী।
রিয়া বলেন, ‘জেল আসলে অন্য এক জগত। ওখানে কোনও সমাজ নেই। সবাই একই সংখ্যা মাত্র। তবে জেলে যারা থাকেন, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ নির্দোষ হন। অন্তত আমার অভিজ্ঞতা তাই বলে।’
রিয়া আরও বলেন, ‘আমি যাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ বলেছিলেন তারা এই কাজটি করেননি। নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য বা অন্য কোনও কারণে অপরাধ করে ফেলেছিলেন। যেটা ইচ্ছাকৃতভাবে নয়।’
জেলের অনুভূতি শেয়ার করতে গিয়ে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এমন একটা পরিবেশ, যেখানে আপনাকে প্রতিমুহূর্তেই বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে নিতে হবে। সারাদিন আপনি যেহেতু তেমন কোনও কাজ করেন না তাই এক একটা দিন শেষ হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এক একটা দিন এক বছরের মতো মনে হয়।’
অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘প্রথম প্রথম ওই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া সত্যি কঠিন ছিল। একটা গভীর হতাশা এবং অন্ধকার তৈরি হয় মনে। আসলে যারা জেলে থাকে, তারা বিশ্বাসই করতে পারে না যে তারা ওই পরিবেশে থাকতে পারে।’
বিচার ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে রিয়া বলেন, ‘যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে দোষী প্রমাণ করতে করতেই চার বছর লেগে যায়। তারপর তার শাস্তির মেয়াদ শুরু হয়। অন্যদিকে যারা নির্দোষ, তাদের মধ্যেও কেউ ৭ বছর, কেউ ৮ বছর, কেউ আবার ১০ বছর ধরে জেলে রয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের বাসভবনে মারা যান সুশান্ত সিং রাজপুত। সুশান্তের মৃত্যুর পর বলিউডের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অন্ধকার দিক মানুষের সামনে উঠে আসে। অভিনেতার মৃত্যুর ৫ বছর পর প্রমাণিত হয় অভিনেতাকে খুন করা হয়নি, বরং আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বল ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।
এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি।
২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।
ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’