এমন যেন আর কারও সাথে না ঘটে: কারামুক্তির পর আয়ুব আলী
Published: 26th, March 2025 GMT
পাবনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় নামের মিলের কারণে ২৬ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন মাগুরার সেই আয়ুব আলী। গত সোমবার পাবনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। আয়ুব আলী বলেন, ‘এমন যেন আর কারও সাথে না ঘটে। নিরপরাধ কোনো লোক যেন এমন হয়রানির শিকার না হয়।’
মো. আয়ুব আলী মাগুরা পৌরসভার নিজনান্দুয়ালীর বাসিন্দা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাবনার সুজানগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় মূল আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার পাবনা থেকে বাড়িতে এসেছেন তিনি।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নিজ এলাকা থেকে আয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই দিন তাঁকে মাগুরা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন তাঁকে মাগুরা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১০ দিন পর তাঁকে পাবনা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, আয়ুব আলীকে সুজানগর থানায় ২০১৭ সালের ৪ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগটি ছিল, পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুকে অপহরণের পর ধর্ষণ। ওই মামলায় গত বছরের ১৪ জুলাই পাবনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছেন।
মামলার নথি হাতে পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ওই ঘটনার সঙ্গে কারাগারে থাকা আয়ুব আলীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অন্য একজন আয়ুব আলীর জায়গায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ২২ মার্চ ‘এক আয়ুবের সাজা ভোগ করছেন আরেক আয়ুব’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আয়ুব আলীর আইনজীবী মো.
কারামুক্ত আয়ুব আলী বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। এই হয়রানির কারণে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। সমাজে মানসম্মান নষ্ট হইছে। আর্থিক ক্ষতি হইছে। আর পরিবারের মানসিক অশান্তি তো আছেই। সরকারের কাছে আমার দাবি, আমার সাথে যা হইছে, এমন যেন আর কারও সাথে না হয়। নিরপরাধ কোনো লোক যেন এমন হয়রানির শিকার না হয়।’
মামলার নথি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, আসামি আয়ুব আলীর বাবার নাম মো. যদন আলী খান হলেও ভুল করে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল ওমেদ শেখ। এ কারণে ওমেদ শেখের ছেলে আয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, যদন আলী খানদের মূল বাড়ি জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামে। তবে দীর্ঘদিন তাঁর ছেলে আয়ুব আলী পৌরসভার নিজনান্দুয়ালীর কাটাখালী আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা ছিলেন। বছর চারেক আগে আশ্রয়কেন্দ্রের পাশে জায়গা কিনে বাড়ি করেছেন। ওই একই আশ্রয়কেন্দ্রে কয়েকটি ঘর ব্যবধানে থাকতেন সদ্য কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আয়ুব আলীর বাবা মো. ওমেদ আলী ওরফে ওমেদ শেখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হয়র ন র ক আয় ব ন আর ক
এছাড়াও পড়ুন:
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির।
ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”
আরো পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।
ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।
বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।
ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।
তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।
জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ