চীনের বিএফএ সম্মেলনে আজ বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 27th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা।
লাওসের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সাই সিফানডোন, চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং শুয়েশিয়াং, বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার চেয়ারম্যান বান কি-মুন এবং এর মহাসচিব ঝাং জুন হাইনানের বিএফএ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠেয় এ অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কু দোংইউ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। অধ্যাপক ইউনূস এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এছাড়া, রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
চার দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশ থেকে রওনা দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস এরই মধ্যে চীন পৌঁছেছেন। প্রধান উপদেষ্টাসহ তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী সাউদার্ন এয়ারলাইন্সে একটি বিশেষ ফ্লাইট বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে দেশটির হাইনানের কিয়োংহাই বোয়াও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.
বোয়াও ফোরামের পাশাপাশি, তিনি বিশ্বখ্যাত এবং চীনের বড় বড় কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
২৯ মার্চ অধ্যাপক ইউনূস পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিকেইউ) বক্তৃতা দেবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে।
তিনি চীনের হাসপাতাল চেইনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন, যাতে তারা যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং হাসপাতাল স্থাপনের জন্য উৎসাহিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার আগামী ২৯ মার্চ দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?