আজ রাতের আকাশে দেখা যেতে পারে নক্ষত্র বিস্ফোরণের বিরল দৃশ্য
Published: 27th, March 2025 GMT
মহাকাশ মানেই যেন চমক। বিশাল মহাকাশজুড়ে প্রতিনিয়ত দেখা যায় নানা ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা। কোনো কোনো ঘটনা স্বাভাবিক, প্রায় সব সময় দেখা যায়। আবার কিছু ঘটনা অনেক বছর পরপর দেখা যায়। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের আকাশ থেকে বিরল এক মহাজাগতিক ঘটনা দেখা যেতে পারে। মহাকাশের নর্দান ক্রাউন নক্ষত্রমণ্ডলের টি করোনা বোরিয়ালিস বাইনারি স্টার সিস্টেমে থাকা একটি নক্ষত্র বিস্ফোরণের বিরল দৃশ্য খালি চোখেই দেখার সুযোগ মিলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর ফলে ১৯৪৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশাল এক নক্ষত্র বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা যাবে আকাশে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, টি করোনা বোরিয়ালিস বাইনারি স্টার সিস্টেমে থাকা নক্ষত্রটি নোভা বিস্ফোরণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এ বিষয়ে এসইটিআই ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক মার্চিস জানিয়েছেন, নক্ষত্রটিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিস্ফোরণ ঘটবে। এই নক্ষত্র পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এতে দুটি তারা রয়েছে, যেগুলো লাল দৈত্য ও সাদা বামন তারা নামে পরিচিত।
লাল দৈত্য তারাটি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শীতল ও প্রসারিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন উপাদান নির্গত হচ্ছে। আর সাদা বামন তারার জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে ও ধীরে ধীরে শীতল হচ্ছে। এর ফলে সাদা বামন তারা ধীরে ধীরে লাল দৈত্য তারা থেকে উপাদান সংগ্রহ করছে। এরপর সাদা বামন তারায় একটি থার্মোনিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ ঘটবে। এই বিস্ফোরণের দৃশ্য পৃথিবী থেকে খালি চোখে দৃশ্যমান হবে। বিস্ফোরণের দৃশ্য কয়েক দিন রাতের আকাশে দেখা যেতে পারে।
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ভ্যারিয়েবল স্টার অবজারভার্সের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের মার্চ ও এপ্রিল মাসে নক্ষত্রটির উজ্জ্বলতা কমে গেছে। তখন বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে নক্ষত্রটির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এর আগে ১৭৮৭, ১৮৬৬ ও ১৯৪৬ সালে নক্ষত্র বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা গিয়েছিল পৃথিবী থেকে। এ বিষয়ে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের নোভা ইভেন্টের বিশেষজ্ঞ হাউন্সেল বলেন, অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিজ্ঞানী এসব ঘটনা দেখেছেন। জীবনে দেখার মতো দৃশ্য এটি।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।