শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে তিন পোশাক কারখানাকে সোয়া ১২ কোটি টাকা দিল
Published: 27th, March 2025 GMT
ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে তিনটি পোশাক কারখানাকে ১২ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ টাকা দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন- বোনাসসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধের বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেছেন, এই ঈদ অন্যান্য ঈদ থেকে অনেক ভালো। অন্যান্য বছরের তুলনায় শ্রমিক অসন্তোষ কম। পোশাক খাতের অনেকেই ভালো করছে। এই শিল্পটা বসে যায়নি, পোশাক শিল্পে ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, রোয়ার ফ্যাশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে তাদের শ্রমিকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে পাওনাদি পরিশোধের জন্য এরইমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিলের আপদকালীন হিসাব থেকে ১ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে, এ উদ্যোগ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রসারিত করা যাবে না।
তিনি বলেন, শ্রম অসন্তোষ নিরসনে গত ২৫ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিএনজেড গ্রুপের অ্যাপারেলস ইকো লিমিটেড গাড়ি বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেছে। এটা এর আগে বাংলাদেশে হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। মালিক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন।
এছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ সহায়তা বাবদ ১১ কোটি টাকা ছাড় করেছে বলে জানিয়েছেন শ্রম উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, স্টাইলক্রাফট অ্যান্ড ইয়াংওয়ান বিডি লিমিটেড বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আজ একটি সভা হয়েছে। সভায় শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে।
পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, যার যা পাওনা, পেয়ে যাবেন। বাকিরা যারা না পান, আজ বা কাল সকালে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করব। প্রায় সব সমস্যাই সমাধান হয়ে গেছে।
জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট। রাস্তার দুই পাশে দোকান বসেছে। সদরঘাট যেতে এই সড়কটি সচল রাখার কথা জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি পুলিশের ডিসি সাউথকে অনুরোধ করছি, এটি আপনারা দেখেন। আমি যদি বের হই, এরকম দেখি, আপনাদের বিরুদ্ধেই আমাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করতে হবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর শ ধ র উপদ ষ ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।