গাজীপুরের শ্রীপুরে বাবার কাছে নেশার টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছিলেন সন্তান। পরে ভাতিজার মারধরে মারা গেছেন ওই হুমকিদাতা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটায় উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত সজীব আহমেদ (৩২) উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মো.

তমিজ উদ্দিনের ছেলে। তবে তিনি ওই গ্রামের পাশে সাটিয়াবাড়ি গ্রামে থাকতেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. সৈকত আহমেদ (১৮) নিহত সজীব আহমেদের ভাতিজা। সৈকত স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

নিহত ব্যক্তির বাবা মো. তমিজ উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলে সজীব আহমেদ দীর্ঘদিন নেশা করেন। গতকাল রাতে তাঁকে ফোন করে ২০ হাজার টাকা দিতে চাপ দেন। এক ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করে টাকার ব্যবস্থা হয়েছে কি না, তা জানতে চান। এ সময় সজীব তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। টাকা না দিলে তাঁকে মারধরের হুমকিও দেন।

তজিম উদ্দিন বলেন, হুমকিতে ভয়ে পেয়ে তিনি বিষয়টি তাঁর নাতি সৈকতকে জানান। পরে সৈকত রাতেই সজীবকে ধরে বাড়িতে এনে মারধর করেন। একপর্যায়ে সজীবের মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন নেশা করে সজীব পরিবারে অশান্তি করে যাচ্ছিলেন। নেশার টাকা না দিতে পারলে বাড়িতে ভাঙচুর চালাতেন। এমনকি নেশার করে অত্যাচার চালানোর কারণে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। এমনকি তাঁকে আলাদা বাড়ি করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নেশা করতে গিয়ে সেই বাড়ি অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন সজীব।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, খবর পেয়ে আজ দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সৈকতকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান

ভুলক্রমে সীমানায় ঢুকে পড়ায় পাকিস্তানি রেঞ্জারদের হাতে আটক হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বিএসএফের অনুরোধেও কর্ণপাত করছে না পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে পঠানকোট বিএসএফ দপ্তরে স্বামীর সর্বশেষ খবর জানিত ছুটে গেছেন পুর্নমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও পরিবার। 

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাও সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে আটক হন বিএসএফ সদস্য পুর্নমকুমার সাউ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রিষড়া পৌরসভার ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পুর্নম পাঠানকোটের ফিরোজপুর বর্ডারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি চব্বিশ ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ কনস্টেবল। 

বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনকালে কড়া রোদে ক্লান্ত হয়ে পড়লে গাছের নিচে আশ্রয় নেন পুর্নম। এ সময় তিনি ভুল করে বর্ডার পেরিয়ে গেলে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক হন। এ দিকে ঘটনার পর তিনবার পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছে বিএসএফ। কিন্তু তারা পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে দেয়নি। 

স্বামীর এমন দুঃসংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। শেষবার হোলির সময় ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন পুর্নম। গত ৩১ মার্চ কাজে যোগ দেন তিনি।  

পুর্নমের বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, ছেলেকে নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। কোনো খবর পাচ্ছেন না। বিএসএফ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বলে তাকে জানানো হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে ছেলেকে মুক্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। 

সীমান্তরক্ষীদের ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর বৈঠকের পরে তাদের মুক্তিও দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি ভিন্ন। পাক রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। গত শুক্রবার পর্যন্ত এই ইস্যুতে তিনবার পতাকা বৈঠকে বসেছেন বিএসএফ এবং পাক রেঞ্জার্সের প্রতিনিধি দল। কিন্তু মিমাংসা হয়নি।   

এরপরই রবিবার পুর্নমের বাড়ি যান বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা পুর্নমকে মুক্ত করে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। যদিও মৌখিক কথায় আর ভরসা রাখতে রাজি নন রজনী। এ কারণে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ সোমবার পাঠানকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে তথ্য না পেলে দিল্লি গিয়ে স্বামীর খবর জানতে চাইবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বিএসএফের পরিচালক জেনারেল দলজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন ঘটনার পরে ভারত-পাক নিয়ন্ত্রণরেখায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুর্নমকুমার সাউকে ফিরিয়ে আনতে সব রকমের চেষ্টা চলছে। এমনকি পাকিস্তানি রেঞ্জারদের সঙ্গে কমান্ডার স্তরে বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

সুচরিতা/তারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান