ঈদ ঘিরে নিরাপত্তাঝুঁকি নেই: ডিএমপি কমিশনার
Published: 30th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি নেই বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় সতর্ক আছি। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, নিষিদ্ধঘোষিত যেসব দল আছে, তারা যেন কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।’
আজ রোববার সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত আয়োজনের সর্বশেষ প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে শেখ মো.
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রমজান মাসে ঢাকাবাসী নিরাপদে ছিল। ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ তাঁরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন। তাঁদের কাছে এ ধরনের ‘রিপোর্টেড ক্রাইম’ খুব কম ছিল। আজ রমজানের শেষ দিন। তাঁরা আশা করছেন, আজও সব ভালোভাবেই যাবে।
ঈদের জামাতের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার জানান, রাজধানীতে ১১১টি ঈদগাহ ও ১ হাজার ৫৭৭টি মসজিদে মোট ১ হাজার ৭৩৯টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। তাঁদের সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট (এটিইউ), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) থাকবে। বাংলাদেশে সেনাবাহিনীও তাঁদের সহায়তায় থাকবে। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে পুরো ঢাকায় নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলছেন তাঁরা।
জাতীয় ঈদগাহের জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, অপ্রকাশ্য অনেক নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেওয়া হয়। যেগুলো নিরাপত্তার স্বার্থেই গোপন রাখা হয়।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ৩৫ হাজার মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাত সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় ঈদগ হ ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।