মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। 

রোববার প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে মিয়ানমারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে জরুরিভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী হিসেবে ওষুধ, তাঁবু, শুকনা খাবার ও চিকিৎসা সেবাসহ রেসকিউ এবং মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে।
 
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুর্মিটোলায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি থেকে বিমানবাহিনীর একটি সি-১৩০জে বিমান এবং আর্মি এভিয়েশনের একটি কাসা সি-২৯৫ডব্লিউ বিমান জরুরি ত্রাণসামগ্রীসহ মিয়ানমারের ইয়াংগুনের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। 

যাত্রার প্রাক্কালে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। তারা মিয়ানমারে জরুরি সহায়তা প্রদানকারী দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের পূর্বপ্রস্তুতি পরিদর্শন করেন।

এর আগে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত ১৬০০ মানুষের প্রাণহানি এবং ৩০০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ভূমিকম্পের ফলে খাদ্য ও পানি, বাসস্থান সংকট এবং জরুরি চিকিৎসা সেবার অভাবে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। 

বাংলাদেশ সরকার আগেই জানিয়েছিল, মিয়ানমারের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মানুষের সহায়তায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। প্রতিবেশী দেশের মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ মর্মাহত এবং তাদের সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর।

এদিকে, ত্রাণসামগ্রী পাঠানো ছাড়াও ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে ১০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের প্রয়োজন সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে এ উদ্ধারকারী এবং মেডিকেল দলগুলো পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এ মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ণ ব তরণ ভ ম কম প ভ ম কম প র জন য র একট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ