২৫ বলে দরকার ছিল ১ রান। সিঙ্গেল নিলেই চলত, শ্রেয়াস আয়ার হয়তো ভেবেছেন রান তাড়া শুরুর মেজাজটা শেষেও ধরে রাখা উচিত। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে আবদুল সামাদের প্রথম বলটা ডট দেওয়ার পর তাই লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে পাঞ্জাব কিংসের ৮ উইকেটের এই জয়ের কৃতিত্ব শুধু শ্রেয়াসকে দিলে অবশ্য অন্যায় হয়।
আরও পড়ুনএকটি কলা দিয়ে লাঞ্চ করেও চার উইকেট অশ্বিনীর২ ঘণ্টা আগেলক্ষ্ণৌর ১৭১ তাড়া করতে নেমে শ্রেয়াসের ব্যাট থেকে অধিনায়কোচিত ৩০ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস এসেছে। কিন্তু শ্রেয়াস শেষ করার আগে শুরুটা করেছিলেন ওপেনার প্রভসিমরান সিং। ২৩ বলে তুলে নেন ফিফটি। পাওয়ার প্লেতে পাঞ্জাবের তোলা ৬২ রানের ৪৫ রানই তাঁর। শেষ পর্যন্ত ৩৪ বলে ৬৯ করা প্রভসিমরানকে থামাতে লক্ষ্ণৌকে গড়তে হয়েছে ট্যাগ টিম। আয়ুশ বাদোনি ও রবি রবি বিঞ্চয় মিলে সীমানায় তাঁর দারুণ ক্যাচ নেন। প্রভসিমরান আউট হওয়ার সময় ৫৯ বলে ৬২ দরকার ছিল পাঞ্জাবের। চতুর্থ উইকেটে নেহাল ওয়াধেরাকে নিয়ে ৩৭ বলে ৬৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাকি কাজটা সারেন শ্রেয়াস। ২৫ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়াধেরা।
ঘরের মাঠ একানা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চাপে পড়েছে লক্ষ্ণৌ। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভার শেষে তাদের স্কোর ৩ উইকেটে ৩৯। প্রথম ওভারেই মিচেল মার্শকে শূন্য রানে ফেরান অর্শদীপ সিং। ১৮ বলে ২৮ করা এইডেন মার্করামকে চতুর্থ ওভারে ফেরান লকি ফার্গুসন। পরের ওভারেই অধিনায়ক ঋষভ পন্ত উইকেট উপহার দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। খাটো লেংথে পরা বলটি মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে! গ্যালারিতে লক্ষ্ণৌর সমর্থদের বিশ্বাস হওয়া কঠিন।
লক্ষ্ণৌ এগিয়েছে চতুর্থ উইকেটে নিকোলাস পুরানের সঙ্গে বাদোনির ৪০ বলে ৫৪ রানের জুটিতে। ৩০ বলে ৪৪ রান করা পুরান আউট হওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারের সঙ্গে ২৬ বলে ৩০ ও ষষ্ঠ উইকেটে সামাদের সঙ্গে ২১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন বাদোনি। ৩৩ বলে ৪১ রান করেন বাদোনি। সামাদের ব্যাট থেকে ১২ বলে ২৭।
টানা দ্বিতীয় জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দ্বিতীয় পাঞ্জাব। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে লক্ষ্ণৌ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস: ২০ ওভারে ১৭১/৭ (পুরান ৪৪, বাদোনি ৪১, সামাদ ২৭; অর্শদীপ ৩/৪৩, ফার্গুসন ১/২৬, ম্যাক্সওয়েল ১/২২)।
পাঞ্জাব কিংস: ১৬.
ফল: পাঞ্জাব ৮ উইকেটে জয়ী।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?