কুষ্টিয়ায় সমন্বয়ক পরিচয়ে ওসিকে বদলির হুমকি
Published: 3rd, April 2025 GMT
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেহেদী হাসানকে সাত দিনের মধ্যে বদলির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাব্বির হোসেন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ হিসেবে পরিচয় দেন।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসিকে বদলির হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার (২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন ওসি শেখ মেহেদী হাসান।
সাব্বির হোসেন থানার ভেতর উদ্ধত আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওসি শেখ মেহেদী হাসান। অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের সুগ্রীবপুর গ্রামের আবুল হোসেন পুন্টুর ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংঘর্ষের পর বিরোধ মীমাংসার জন্য থানায় আসেন স্থানীয়রা। তারা মীমাংসার বিয়ে একমত হলেও বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাব্বির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। থানার ভেতর দাঁড়িয়ে এসপি ও ডিআইজিকে কল করে সাত দিনের মধ্যে ওসিকে বদলির হুমকি দেন সাব্বির হোসেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইবি থানার ওসি শেখ মেহেদী হাসান বলেন, ইবি থানাধীন সুগ্রীবপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের মীমাংসা করা হয় থানায়। এলাকাবাসী আমার সঙ্গে দেখা করতে এলে সমন্বয়ক পরিচয়দাতা সাব্বির উদ্ধত আচরণ করেন। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এক জন শিক্ষার্থী বা সমন্বয়কের কাছ থেকে বিষয়টি প্রত্যাশিত না।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, সাব্বির মাঝে-মধ্যেই থানার অফিসারদের হুমকি দেন। সমন্বয়ক পরিচয়ে তিনি পুলিশ অফিসারদের খাগড়াছড়ি-বান্দরবানে ট্রান্সফারের হুমকি দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সাব্বির হোসেন বলেন, ঘটনাটি গ্রাম্যভাবে সমাধান হয়েছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’