চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের একটি বেডে ঘুমিয়ে আছে শিশু আরাধ্য বিশ্বাস। তার দুই পায়ে প্লাস্টার। পাদুটো টানা দেওয়া। হাতে ক্যানোলা। চলছে স্যালাইন। পাশে বসে তার দেখভাল করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। চিকিৎসকরা বলছেন, এখনও শঙ্কামুক্ত নয় শিশুটি। এর কিছুক্ষণ পরেই তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে। এছাড়া আইসিইউতে প্রাণ নিয়ে লড়ছেন কলেজছাত্রী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা (১৮)।
চমেক হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আরেক পাশের একটি বেডে চিকিৎসাধীন আরাধ্যর মামাত ভাই দুর্জয় কুমার বিশ্বাস (১৮)। দুর্জয়ের বাঁ হাত ও ডান পায়ে বড় ধরনের চিড় ধরেছে। মাথায় আঘাত রয়েছে। কুষ্টিয়ার একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র দুর্জয়।
চমেক হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত এক চিকিৎসক সমকালকে বলেন, ‘শিশু আরাধ্যর দুই পা ভেঙেছে। বড় ধরনের আঘাত পেয়েছে। মাথায়ও আঘাত পেয়েছে। এছাড়া দুর্জয়ের হাত ও পা যেভাবে ভেঙেছে তার আঘাত অনেক গভীর। তারও মাথায় আঘাত আছে। সাতদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর পরবর্তী অবস্থা জানা যাবে। এখন পর্যবেক্ষণে আছে।’
বুধবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে দুই দম্পতিসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন আরাধ্যর বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মণ্ডল। আর আহত দুর্জয় কুমার বিশ্বাস সাধনা মণ্ডলের ভাতিজা।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে ছুটে এসেছেন আরাধ্যের কাকা অসিত কুমার বাড়ই। তিনি সমকালকে বলেন, ‘এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটবে কখনও ভাবিনি। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে আরাধ্যকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘আরাধ্যের চিকিৎসা আপাতত চট্টগ্রামে চলবে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলাম–লুৎফুন নাহার দম্পতি ও তাদের দুই মেয়ে আনিশা আক্তার (১৪) ও লিয়ানার (৮) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হয়ে আইসিইউতে বড় মেয়ে তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা (১৮)।
বৃহস্পতিবার আইসিইউ'র সামনে পায়চারি করছিলেন তাসনিয়া ইসলাম প্রেমার ছোট মামি জেসমিন রহমান। তিনি বলেন, ‘ভাগনির অবস্থা খুবই খারাপ। ঢাকায় যে নিয়ে যাব, সে অবস্থাও নেই। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে এখনও কোনো সাড়া দেয়নি। চিকিৎসকরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তারা দোয়া করতে বলেছেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইস ইউত দ র ঘটন আর ধ য দ র জয় ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আমদানি বৃদ্ধি ইতিবাচক, ধারাবাহিকতা থাকতে হবে
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেটিকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। তবে তিন মাসের চিত্র দিয়ে সামগ্রিক অবস্থা এখনো মূল্যায়ন করার সময় হয়নি।
মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হঠাৎ প্রায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। এটা সুখবর হলেও কোনো বড় প্রকল্পের মালামাল আমদানিতে এত বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। যদি সত্যিকারের নতুন নতুন কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানির মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি ঘটে, তাহলে তা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ধারাবাহিকতা থাকলেই বলা যাবে, দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিনিয়োগ হলে সামনে কর্মসংস্থানও বাড়বে। আর তাতে অর্থনীতিতেও গতি সঞ্চার হবে।
মূলধনি যন্ত্রপাতির মতো ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাসের যে তুলনা করে দেখিয়েছে, তাতে ঋণপত্র খোলার হার ২০ শতাংশ বেড়েছে।
সব মিলিয়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে।
মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, পরিচালক, টি কে গ্রুপ