পুলিশের লুট হওয়া শটগান ও ৭ রাউন্ড গুলিসহ খুলনায় ২ সন্ত্রাসী আটক
Published: 3rd, April 2025 GMT
পুলিশের লুট হওয়া শটগান ও ৭ রাউন্ড গুলিসহ ২ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া তাদের কাছ থেকে আরও দুটি পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রাতে ও আজ বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা নগরীর হরিণটানা থানার বাঙ্গালবাড়ি সড়কে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবু রায়হান মো.
আটককৃতরা হলো- খুলনার ডুমুরিয়াা উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের সবুর সরদারের ছেলে খাইরুল সরদার ও নগরীর বাঙ্গালবাড়ি সড়কের প্রয়াত আব্দুল খালেকের ছেলে ফারুক হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত বুধবার রাতে বাঙ্গালবাড়ি রোডে একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে গুলিবিদ্ধ খাইরুল সরদারকে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় অস্ত্র কিনতে গিয়ে অস্ত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় অসর্তকতার কারণে তার হাতে থাকা পিস্তলের গুলি ফায়ার হয়ে তার বাম হাতের তালুতে লেগে আহত হন।
পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে খাইরুল বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় অস্ত্র বিক্রেতা ফারুক হোসেনের বাড়ি দেখিয়ে দেয়। ওই বাড়ির রান্নাঘরের জ্বালানি কাঠের স্তুপের মধ্য থেকে বিদেশি দুইটি পিস্তল, বসতঘরের মধ্যে থাকা টিনের বাক্সে রাখা একটি শটগান এবং শটগানের ৭ রাউন্ড গুলি, ঘরের ভেতরে দেওয়ালের উপর থেকে পিস্তলের ৮ রাউন্ড তাজা গুলি এবং এক রাউন্ড গুলির খোসা, বসতঘরের খাটের নিচ থেকে একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা শটগান এবং শটগানের ৭ রাউন্ড গুলি পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক বিভিন্ন সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কাছে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা করে বলে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় হরিণটানা থানায় মামলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শটগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।