পুলিশের লুট হওয়া শটগান ও ৭ রাউন্ড গুলিসহ ২ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া তাদের কাছ থেকে আরও দুটি পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রাতে ও  আজ বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা নগরীর হরিণটানা থানার বাঙ্গালবাড়ি সড়কে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবু রায়হান মো.

সালেহ মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

আটককৃতরা হলো- খুলনার ডুমুরিয়াা উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের সবুর সরদারের ছেলে খাইরুল সরদার ও নগরীর বাঙ্গালবাড়ি সড়কের প্রয়াত আব্দুল খালেকের ছেলে ফারুক হোসেন। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত বুধবার রাতে বাঙ্গালবাড়ি রোডে একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে গুলিবিদ্ধ খাইরুল সরদারকে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় অস্ত্র কিনতে গিয়ে অস্ত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় অসর্তকতার কারণে তার হাতে থাকা পিস্তলের গুলি ফায়ার হয়ে তার বাম হাতের তালুতে লেগে আহত হন।

পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে খাইরুল বাঙ্গালবাড়ি এলাকায় অস্ত্র বিক্রেতা ফারুক হোসেনের বাড়ি দেখিয়ে দেয়। ওই বাড়ির রান্নাঘরের জ্বালানি কাঠের স্তুপের মধ্য থেকে বিদেশি দুইটি পিস্তল, বসতঘরের মধ্যে থাকা টিনের বাক্সে রাখা একটি শটগান এবং শটগানের ৭ রাউন্ড গুলি, ঘরের ভেতরে দেওয়ালের উপর থেকে পিস্তলের ৮ রাউন্ড তাজা গুলি এবং এক রাউন্ড গুলির খোসা, বসতঘরের খাটের নিচ থেকে একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা শটগান এবং শটগানের ৭ রাউন্ড গুলি পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক বিভিন্ন সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কাছে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা করে বলে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় হরিণটানা থানায় মামলা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শটগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ