জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলার বর্ধিত সময় ও যাত্রাপালার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন।

এদিকে জেলা প্রশাসনের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে মেলার আয়োজক কমিটি, যাত্রাপালার আয়োজক ও মেলায় আসা দোকানিরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা সুলতানা গতকাল মেলায় যান। তিনি মেলার দোকানপাট ও যাত্রার প্যান্ডেল অপসারণ করে নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বলেন। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর যাত্রার প্যান্ডেল অপসারণ করা হয়।

এ বিষয়ে মনিরা সুলতানা বলেন, ‘শর্ত সাপেক্ষে গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলার সময় বাড়ানো ও মেলায় যাত্রাপালার পরিচালনার অনুমতি পেয়েছিল। জননিরাপত্তা ও শর্তভঙ্গের কারণে জেলা প্রশাসক মেলার বর্ধিত সময় ও যাত্রার অনুমোদন বাতিল করেছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। মেলার যাত্রার প্যান্ডেল অপসারণ করা হয়েছে। দোকানপাটও সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।’

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান পদাধিকার বলে গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলা কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘মেলার বর্ধিত সময় ও যাত্রাপালার অনুমোদন বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। বর্ধিত সময়ে মেলা ভালোয় চলছিল। মেলায় কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং যাত্রাপালায়ও কোনো অশ্লীলতা হয়নি। তারপরও সময় থাকতে কেন অনুমোদন বাতিল করা হলো, তা জানি না।’

জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, জননিরাপত্তা ও শর্তভঙ্গের কারণে গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলার বর্ধিত সময় ও যাত্রাপালার অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ