গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় মুসল্লিদের বাধায় বাতিল হলো ‘আপন দুলাল’ নাটকের মঞ্চায়ন।  

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ উদয়ন সংঘ মাঠে নাটকের মঞ্চায়ন হওয়ার কথা ছিল।  

রানীগঞ্জ উদয়ন সংঘ থেকে জানা গেছে, মাসখানেক ধরে ‘আপন দুলাল’ নাটকটির জন্য রিহার্সেল চলছিল এবং এটি ছিল ৫২ বছর ধরে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ধারাবাহিক একটি অংশ। প্রতি বছর সংস্কৃতিকর্মীদের আয়োজনে রানীগঞ্জ উদয়ন সংঘ স্থানীয় মাঠে নাটক, গীতিনাট্য, পালাগানের মঞ্চায়ন হয়ে আসছে। এবার ছিল ৫২তম আসর।

স্থানীয় নাট্যকর্মী খন্দকার শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, বুধবার (২ এপ্রিল) রাতে তারা রানীগঞ্জ বাজারে বসেছিলেন, তখন রানীগঞ্জ বাজার মসজিদের ইমাম মো.

আজিজুল হক, মসজিদের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম এবং কয়েকজন মুসল্লি তাদের কাছে এসে নাটকটির মঞ্চায়ন বন্ধ করতে বলেন। তারা শুধু নাটকটি বন্ধ করতে নয় বরং চিরকালব্যাপী ওই এলাকাতে নাটক মঞ্চায়ন বন্ধ রাখার কথা বলেন। এরপর, বৃহস্পতিবার সকালে নাটকের জন্য তৈরি মঞ্চ ও প্যান্ডেলটি ডেকোরেটরের লোকজন এসে খুলে নিয়ে যায়।

খন্দকার শাহাদাত হোসেন বলেন, “এটি একটি গীতিনাট্য। নারী চরিত্রবর্জিত নাটক, যেখানে নারীর কোনও অভিনয় নেই। এটি একটি পরিশীলিত নাটক। অথচ, এই নাটকটি মঞ্চে গড়াতে দেয়নি তারা। এতদিনের প্রস্তুতি, শ্রম, উদ্যোগ সব কিছু ভেস্তে গেল। এই বাধা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাজনক।” 

রানীগঞ্জ বাজার মসজিদের ইমাম মো. আজিজুল হক বলেন, “সমাজে একটি খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নাটক আয়োজক কমিটিকে সেটি অনুষ্ঠিত না করার জন্য অনুরোধ করেন। তারা সমাজের ভালোর জন্য শেষ পর্যন্ত নাটকটি অনুষ্ঠিত না করার সিদ্ধান্ত নেন। এটি শুধুমাত্র আমার বা মুসল্লির পক্ষ থেকে একক সিদ্ধান্ত ছিল না, বরং এটি একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল। যেখানে স্থানীয় সমাজের স্বার্থ ও ধর্মীয় অনুভূতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।”

রানীগঞ্জ বাজার মসজিদের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এসব করলে সমাজে খারাপ প্রভাব পড়ে। আমরা সমাজের মুসল্লি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে নাটক বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু রানীগঞ্জ নয়, ভবিষ্যতে এই ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ওই পুরো দুর্গাপুর ইউনিয়নে আর কখনও কোনও নাটক অনুষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না। কারণ, এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই সিদ্ধান্ত তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, “এই ঘটনার বিষয়ে থানায় কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। বরং থানা পুলিশ এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে নাটক মঞ্চায়নকারীদের সাথে যোগাযোগ করেছে। তারা জানিয়েছে এ ব্যাপারে তাদের কোন অভিযোগ নাই। বিষয়টি তারা স্থানীয়ভাবে সমাধান করেছেন।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তামান্না তাসনিম বলেন, “বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। তবে নাটক আয়োজনকারী এবং বাধা প্রদানকারী কেউই আসলে আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। যে কারণে আমি পুরো বিষয়টির কিছুই অবগত নই।” 

ঢাকা/রফিক/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মসজ দ র অন ষ ঠ র জন য ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে বিএনপি-ছাত্রদল সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩

নরসিংদীর পলাশে শোডাউনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইসমাইল হোসেন (২৬) নামে এক ছাত্রদল কর্মী গুলিবিদ্ধসহ তিন জন আহত হয়েছেন।

রবিবার (১৫ জুন) রাতে উপজেলার বিএডিসি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ ইসমাইল হোসেন উপজেলা ছাত্রদলের কর্মী ও ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর মহল্লার আব্দুর রহিমের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে উপজেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিট পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শোডাউনের উদ্দেশে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি বিএডিসি মোড় এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের নেতৃত্বে তার সমর্থকদের একটি শোডাউনের মুখোমুখি হয়। এসময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ছাত্রদল কর্মী ইসমাইল হোসেন ও বিএনপি নেতা ফজলুল কবির জুয়েলসহ আরো একজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ছাত্রদল কর্মী ইসমাইলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বিএনপি নেতা ফজলুল কবির জুয়েলকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

বাগেরহাটে বিএনপির সম্মেলনে ২ পক্ষের সংঘর্ষ

পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ‘‘জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল নির্বাচনি এলাকায় শোডাউন করতে যান। এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে তিন জন আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’’

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ