দুই দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘বিডিআর কল্যাণ পরিষদ’। তারা আগামীকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। পাশাপাশি আলোচনা সভা করবে।

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলমসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিষদ বলছে, তারা ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাবেক বিডিআরের (বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ–বিজিবি) ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব করে। পরিষদের দুই দফা দাবি হলো চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সব সুযোগ–সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করা এবং জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি না পাওয়া বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলম বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের শিকার চাকরিচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। তদন্ত কমিশনের প্রজ্ঞাপন থেকে উল্লিখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ ও কার্যপরিধি–২–এর (ঙ) নম্বর ধারা প্রত্যাহার করতে হবে। স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কমিশনকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। মিথ্যা সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দণ্ডিত নিরপরাধ কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

ফয়জুল আলম বলেন, চাকরিচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যরা গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ একাধিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের একটি প্রতিনিধিদলকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁদের সব যুক্তিসম্মত সমস্যার সমাধান ১৫ মার্চের মধ্যে করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্বাস প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করা হয়নি। তাঁরা নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তাঁরা মনে করেন, যৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে ন্যায্য অধিকার ও দাবি আদায় করা সম্ভব হবে। এ জন্য তাঁরা ছয়টি নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালে গুমের মামলা তদন্ত, বিচারে সহযোগিতা করবে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক গ্রুপ: চিফ প্রসিকিউটর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হওয়া গুমের মামলার তদন্তের পাশাপাশি বিচারে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা করবে। আজ সোমবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স (ডব্লিউজিইআইডি)-এর ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা ও আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। এই দুজন ও ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খানসহ জাতিসংঘের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি আজ দুপুরে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

পরে এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের গুমের কেসগুলোকে কীভাবে আমরা ডিল করছি এবং এই কেসের যে তদন্ত, বিচার কোন পর্যায়ে আছে; কী কী চ্যালেঞ্জ আমরা ফেস করছি, এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য কী কী ধরনের সাপোর্ট দরকার, তাঁরা কী ধরনের সাপোর্ট আমাদের দিতে পারেন, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বিচার অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা করতে এই কমিটি প্রস্তুত আছে এবং তাঁরা এটা করবেন।’

গুমের শিকার, এমন ভুক্তভোগীরা সাক্ষী দিতে এসে যাতে বিপদে না পড়েন, সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তাঁরা বলেছেন, যত ধরনের সাহায্য লাগবে, তাঁরা করবেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে সাক্ষী সুরক্ষার ব্যাপারটা। এ ব্যাপারে আইন আছে, কিন্তু তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেক ভুক্তভোগী আছেন, তাঁদের হয়তো এমন নিরাপত্তার সংকট আছে, তাঁদের হয়তো এক জায়গা থেকে সরিয়ে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দরকার হতে পারে। সেটা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে করা কঠিন। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের যদি সহযোগিতা পাওয়া যায়, তাহলে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের জন্য কাজ করা সহজ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ