ফরিদপুরের নগরকান্দায় বিয়ের এক মাসের মধ্যে নিজ ঘরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন জামাল শেখ (৫৪) নামের এক প্রবাসফেরত ব্যক্তি। শুক্রবার রাতে উপজেলার তালমা ইউনিয়নের দক্ষিণ কোনাগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

জামাল শেখ একই গ্রামের মৃত হাতেম শেখের একমাত্র সন্তান। প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জামাল মালয়েশিয়া ছিলেন। রমজান মাস শুরুর ১৫-২০ দিন আগে দেশে ফেরেন। ৬ রমজান তিনি সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রামের সাজেদা বেগম (২৮) নামের এক নারীকে বিয়ে করেন।

সাজেদা বেগমের ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতেও তারা নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাত ২টার দিকে হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তখন ঘরের ভেতর দুই ব্যক্তিকে দেখতে পান। তাদের একজনকে তাঁর স্বামী জামাল চিনে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তি শাবল দিয়ে তাঁর (জামাল) অণ্ডকোষে আঘাত করে পালিয়ে যায়। 
এ সময় গুরুতর আহত হন জামাল শেখ। স্বামী-স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসক জামালকে মৃত ঘোষণা করেন।

যদিও সাজেদার এমন বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রতিবেশীরা। তাদের দাবি, শুক্রবার রাতে জামালের বাড়িতে ডাকাতি-চুরি হয়েছে– এমন সাড়াশব্দ পাননি। ঘরের দরজা-জানালা ও আসবাব সবই অক্ষত। টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার কিছুই খোয়া যায়নি। অন্য কোনো ঘটনা ধামাচাপা দিতে ডাকাতি-চুরির নাটক সাজানো হতে পারে।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সফর আলী বলেন, এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছু গোপন রাখতে হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের আশা করছেন। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ