বিয়ের মাস না ঘুরতেই নিজ ঘরে খুন ৫৪ বছরের জামাল
Published: 6th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় বিয়ের এক মাসের মধ্যে নিজ ঘরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন জামাল শেখ (৫৪) নামের এক প্রবাসফেরত ব্যক্তি। শুক্রবার রাতে উপজেলার তালমা ইউনিয়নের দক্ষিণ কোনাগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জামাল শেখ একই গ্রামের মৃত হাতেম শেখের একমাত্র সন্তান। প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জামাল মালয়েশিয়া ছিলেন। রমজান মাস শুরুর ১৫-২০ দিন আগে দেশে ফেরেন। ৬ রমজান তিনি সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রামের সাজেদা বেগম (২৮) নামের এক নারীকে বিয়ে করেন।
সাজেদা বেগমের ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতেও তারা নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাত ২টার দিকে হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তখন ঘরের ভেতর দুই ব্যক্তিকে দেখতে পান। তাদের একজনকে তাঁর স্বামী জামাল চিনে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তি শাবল দিয়ে তাঁর (জামাল) অণ্ডকোষে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
এ সময় গুরুতর আহত হন জামাল শেখ। স্বামী-স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসক জামালকে মৃত ঘোষণা করেন।
যদিও সাজেদার এমন বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রতিবেশীরা। তাদের দাবি, শুক্রবার রাতে জামালের বাড়িতে ডাকাতি-চুরি হয়েছে– এমন সাড়াশব্দ পাননি। ঘরের দরজা-জানালা ও আসবাব সবই অক্ষত। টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার কিছুই খোয়া যায়নি। অন্য কোনো ঘটনা ধামাচাপা দিতে ডাকাতি-চুরির নাটক সাজানো হতে পারে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভুয়া র্যাবকে ধাওয়া দিল আসল র্যাব, পথে দুই পক্ষকেই পেটাল জনতা
জোরে হর্ন দিতে দিতে দ্রুতগতিতে ছুটছিল একটি মাইক্রোবাস। সেটির কিছুটা পেছনে ছুটছিল আরেকটি মাইক্রোবাস। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রথম মাইক্রোবাসটিকে থামান স্থানীয় লোকজন। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের র্যাব বলে পরিচয় দেন। তবে তাঁদের কারও গায়ে র্যাবের পোশাক ছিল না। সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের। ওই ব্যক্তিরা পালাতে চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে মারধর শুরু করেন স্থানীয় লোকজন।
এমন সময়ে সেখানে পৌঁছে যায় দ্বিতীয় মাইক্রোবাসটি। এতে ছিলেন র্যাবের প্রকৃত সদস্যরাই। যদিও কয়েকজনের গায়ে ইউনিফর্ম ছিল না। তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় লোকজনের রোষের মুখে পড়ে তাঁরাও পিটুনির শিকার হন। একপর্যায়ে স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে শান্ত করে এই দুই পক্ষকেই উদ্ধার করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চর যশোরদী ইউনিয়নের জয় বাংলার মোড় এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে; গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আমীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জনতার হাত থেকে র্যাব ও ভুয়া র্যাব সদস্যদের উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁদের নিয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার উদ্দেশে যান।
মারধরের শিকার ভুয়া র্যাব পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা হলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ছাব্বিশপাড়া গ্রামের স্বপন খান (৪৫), চাঁদপুর সদরের মদনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৪৫), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কুনসিবাড়ি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আন্ডারচর এলাকার মো. জামিল (৩২) এবং ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা গ্রামের দিদার (২৯)। তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব-১০–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা দুজন সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতি করেছিলেন।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম বলেন, র্যাব-১০–এর হেডকোয়ার্টার থেকে একটি টিম ডাকাত দলকে ধাওয়া করে আসছিল। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে উভয় পক্ষের ওপর চড়াও হন। কিছু র্যাবের সদস্যরা সাদাপোশাকে থাকায় উত্তেজিত লোকজন তাঁদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রকৃত র্যাব বলে চিনতে ভুল করেন।
র্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভুয়া র্যাবের দলকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ধাওয়া করে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোল দিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা গেছে।’ নিজেরাও মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ যখন ভুয়া র্যাব পরিচয়কারীদের মারপিট করছিলেন, তখন তাঁদের যাতে মেরে না ফেলেন, এই আশঙ্কায় আমরা জনগণের পিটুনি থেকে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করি। তবে প্রথম পর্যায়ে জনগণ আমাদেরও ভুয়া র্যাব মনে করেছিলেন। এ কারণে আমাদের সঙ্গে কিছু ঘটনা ঘটেছিল, তবে তা আমলযোগ্য নয়।’