টেলিভিশনের হিসাবে আজ ঈদের সপ্তম দিন। এবারের ঈদে বড় পর্দা বা সিনেমা নিয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে, সে তুলনায় ছোট পর্দার কনটেন্ট নিয়ে চর্চা কম হচ্ছে। অন্য সময়ের তুলনায় এবার টেলিভিশন ও ইউটিউবে নাটকের সংখ্যাও অনেক কম। তবে একদমই যে দেখছে না বা সাড়া পড়েনি, তা নয়। বরং ইউটিউবের কয়েকটি কনটেন্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দর্শকের মধ্যে। যেমন কয়দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে ‘তোমাদের গল্প’ ইউটিউব ফিল্ম নিয়ে। ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে মোস্তফা কামাল রাজের ‘তোমাদের গল্প’।

মুক্তি পেয়েছে সিনেমাওয়ালার ইউটিউব চ্যানেলে। আজ রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত এর ইউটিউব ভিউ ৭০ লাখ ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে মন্তব্য পড়েছে ২৬ হাজারের বেশি। এতে পাঁচ প্রজন্মের পাঁচ অভিনেত্রী তানজিম সাইয়ারা তটিনী, দিলারা জামান, সাবেরি আলম, মনিরা আক্তার মিঠু ও শিল্পী সরকার অপুকে দেখা গেছে। আরও অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান, নাদের চৌধুরী, বড়দা মিঠু, এম এন ইউ রাজু, সমু চৌধুরী ও শিশুশিল্পী আয়াত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নাটকের ছোট ছোট ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে শেয়ার করছেন নাটকের দৃশ্য। কী আছে এ নাটকে? কী বলছে দর্শক?

যৌথ পরিবারের মধ্যে বন্ধন অটুট থাকার গল্প বলা হয়েছে। দেড় ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের এই নাটকের কিছু দৃশ্য দর্শকদের আবেগাপ্লুত করেছে। নাটকের চিত্রনাট্য লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ। শহুরে এক তরুণের গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে যাওয়ার ঘটনা নিয়েই এর গল্প। ছেলেটির নাম রাতুল। তার চরিত্রে ফারহান আহমেদ জোভানের অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শকেরা। রাতুলের চাচাতো বোন তুলির সঙ্গে তার দুষ্টু-মিষ্টি রসায়ন গড়ে ওঠে। তুলি চরিত্রে তানজিম সাইয়ারা তটিনীর প্রতি ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন ভক্তরা।
দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শক ও প্রবাসীরা ইউটিউবে মন্তব্যের ঘরে নাটকটি নিয়ে নিজেদের ভালো লাগার অনুভূতি জানিয়েছেন। কলকাতার মালদা জেলা থেকে মাসুদ আলম নামের একজন নাটকটি দেখে লিখেছেন, ‘এ রকম পারিবারিক ঈদ নাটক একটাও দেখিনি। অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। শেষ দৃশ্যে চোখে জল চলে এসেছে।’ নাটকে রক্তের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকে। মো.

হাসান নামের একজন লিখেছেন, ‘রক্তের মানুষগুলো যারা একসঙ্গে থাকে, যেসব পরিবারের সবাই একসঙ্গে থাকে, তারা সত্যিই ভাগ্যবান। বর্তমানে মানুষের মধ্যে থেকে রক্তের আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।’

মো. সুমন খান নামের একজন লিখেছেন, ‘পরিস্থিতির কারণে দূরে থাকলেও রক্তের সম্পর্কের বন্ধন কখনো ছিন্ন হয় না। স্বার্থের জন্য ভুলে থাকলেও সময়ের ব্যবধানে আবার সবাই এক হয়ে যায়। রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা আসলেই খুবই কষ্টের ব্যাপার। নাটকটিতে রক্তের সম্পর্কের মূল্যবোধ বোঝানো হয়েছে।’ এক দর্শক লিখেছেন, ‘নাটকটি দেখার পর একটা কথাই মনে পড়ল, জীবনে খুব করে চাইতাম যৌথ পরিবারে সবাই একসঙ্গে থাকব। সে রকমই ছিল আমার পরিবারও। কিন্তু সম্পত্তির লড়াইয়ে সম্পর্ক যেন মূল্যহীন হয়ে গেল। এক নিমেষে সবাই আলাদা হয়ে কেউ কারও মুখও দেখে না, কেউ কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথাও বলে না। সম্পত্তির লোভ রক্তের সম্পর্কগুলোকে আলাদা করে দিল। নাটকটা দেখে শুধু এটাই মনে হলো, যদি সবাই এমন করে ভাবত, তাহলে আমার পরিবারের সবাই একসঙ্গে থাকতাম।’
মাহালি সজল নামের একজন লিখেছেন, ‘আশি ও নব্বই দশকের পর অন্যতম একটি পারিবারিক নাটক উপহার দিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। যেখানে ভালোবাসা, অভিমান ও আবেগ মিশে একাকার। একান্নবর্তী পরিবারের ভালোবাসার একটি অনন্য উদাহরণ এই নাটক। পারিবারিক ও রক্তের সম্পর্কের সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্কের কোনো তুলনা হয় না।’ রাশিয়ার মস্কো থেকে ‘তোমাদের গল্প’ দেখে নাজমুল শুভ লিখেছেন, ‘পরিবার-আত্মীয় সবাইকে ছেড়ে একাকী এবারের ঈদ কেটেছে। ঈদের দিন নিজেকে খুব একা লেগেছে। চাইলেও সবাইকে নিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে না পারার যে কষ্ট, সেটা বলে বোঝানো যাবে না। অসাধারণ ছিল নাটকটি। আসলেই রক্তের সম্পর্ককে কখনোই অস্বীকার করে দূরে থাকা যায় না। সবার পারিবারিক বন্ধন এভাবে অটুট থাকুক আমৃত্যু।’

নাটকের দৃশ্যে ফারহান আহমেদ জোভান ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ম র একজন পর ব র র সব ই এক একসঙ গ ন টক র ন টকট আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি

শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”

ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”

সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”

“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আগে সাকিব ভাই করতেন, এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি’
  • বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
  • প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
  • গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, হাতুড়িপেটায় একজন নিহত
  • নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন
  • সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি