দেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগের দুয়ার খুলতে ৭ থেকে ১০ এপ্রিল চার দিনব্যাপী রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হবে।

সামিটের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরা, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কার প্রদর্শন এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সংযোগ তৈরি করা। এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরাও এ সামিটের লক্ষ্য।

৫০ দেশের ৫৫০-র বেশি বিনিয়োগকারী ও আড়াই হাজার দেশি বিনিয়োগকারী সম্মেলনে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছেন।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি জানিয়েছেন, সম্মেলনের বিস্তারিত আয়োজন সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে আজ ৬ এপ্রিল (রবিবার) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিং করবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

এর আগে গত মাসে সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী এই সম্মেলনের আয়োজনের খুটিনাঁটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ব্যবসা সহজ করতে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের বর্তমান মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিশীল বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে আছে। এর অভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমশই বড় হচ্ছে। শ্রমিকদের স্বল্প মজুরি ও কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেক।

বিডা জানায়, সামিটে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট ব্যক্তিত্বরা অংশ নেবেন, যাদের মধ্যে আছেন—জারা গ্রুপের সিইও অস্কার গার্সিয়া মেসেইরাস, ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলাইয়েম, ব্রিটিশ ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, স্যামসাং সি অ্যান্ড টি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট কিয়ংসু লি, গিওর্দানোর সিইও জুনসিওক হান, এক্সেলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট স্টিভেন কোবোস, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উবারের পাবলিক পলিসি প্রধান মাইক অর্গিল এবং মেটার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর সারিম আজিজ। এছাড়াও বি ক্যাপিটাল, গবি, কনজাংশন, মারুবেনি এবং জি এফআর-এর মতো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো স্টার্টআপ বিনিয়োগ ও ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারে কাজ করবে।

সামিটের অংশ হিসেবে, ৭ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার ২৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম, মিরসরাই ও কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শন করবেন। একই দিনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্টার্টআপ সংযোগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। ৮ এপ্রিল, বিনিয়োগকারীরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। দিন শেষে একটি বিশেষ নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া আগামী ৯ এপ্রিল সামিটের মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত, নীতিনির্ধারক এবং শীর্ষ ব্যবসায়ী ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এদিন তরুণ উদ্যোক্তা এক্সপো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি আয়োজিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে ব্রেকআউট সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, বাংলাদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করা হবে।

১০ এপ্রিল সামিটে বিভিন্ন ব্রেকআউট সেশন অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতি (সিটি এনএ ও ইউএনডিপি), টেক্সটাইল (এইচএসবিসি ও বিজিএমইএ), কৃষি ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ (ডাচ দূতাবাস ও এলসিপি) এবং স্বাস্থ্যসেবা (ইন্সপিরা, ইবিএল ও সাজিদা ফাউন্ডেশন)-এর ওপর আলোচনা হবে। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের জন্য ম্যাচমেকিং সেশন এবং সেরা বিনিয়োগ চর্চা নিয়ে রাউন্ড-টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সামিটের পার্টনার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউএনডিপি, এফসিডিও, গ্রামীণফোন, বিশ্বব্যাংক ও ফিকি, যারা যৌথভাবে এফডিআই বাড়াতে সহযোগিতা করবে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

শনি গ্রহের একাধিক চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের সন্ধান

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনি গ্রহের আটটি মাঝারি আকারের চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড শনাক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে মিমাস, এনসেলাডাস, ডায়োন, টেথিস, রিয়া, হাইপেরিয়ন, লাপেটাস ও ফিবি নামের চাঁদগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের তথ্য টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি চাঁদগুলোর ওপরে নিয়মিত নজরও রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডায়োন ও রিয়া চাঁদে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড শনির প্রধান বলয়ের বরফের অনুরূপ। ফিবি চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। লাপেটাস ও হাইপেরিয়নের অন্ধকার অঞ্চলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দেখা যায়। বরফযুক্ত এসব চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও তাঁর সহকর্মীরা এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, কঠিন কার্বন ডাই–অক্সাইড সৌরজগতের প্রান্তসীমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। যদিও সেই অবস্থানে কার্বন ডাই–অক্সাইড স্থিতিশীল নয়। আমরা শনির উপগ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থান জানার মাধ্যমে ভিন্ন পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন গ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইড কীভাবে আটকে আছে, তা জানার সুযোগ আছে এখানে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির চাঁদে আটকে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড থেকে আদর্শ ল্যাবের মতো তথ্য পাওয়া যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদে কমপক্ষে দুটি পৃথক উৎস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ