বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই একটি আধুনিক স্পোর্টস ভিলেজ বা হাব তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও নানা সীমাবদ্ধতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহযোগিতায় দেশের আটটি বিভাগে আধুনিক স্পোর্টস হাব গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।  

শনিবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।  

জাতীয় স্টেডিয়ামে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমরা একটি কেন্দ্রীয় স্পোর্টস ভিলেজ করার কথা ভাবছিলাম। তবে ক্রীড়া বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে এবার দেশের আট বিভাগেই স্পোর্টস হাব গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কাজে সহযোগিতা করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত।’  

এর আগে এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘স্যার (প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস) আরব আমিরাত সফরে গিয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। এরপর থেকেই দেশটি আমাদের এই প্রকল্পে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।’  

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই প্রকল্পটির ডিজাইন ও কারিগরি দিক নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, ‘কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে তা চূড়ান্ত করে জানানো হবে। আশা করছি আগামী অর্থবছরেই কাজ শুরু করা যাবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স প র টস ব আম র ত উপদ ষ ট সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ