মেয়ের বিয়ের জন্য তোলা ১০ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার পুড়ে ছাই, দিশাহারা মা–বাবা
Published: 6th, April 2025 GMT
মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে খরচ করতে স্থানীয় দুটি ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রতন সাহা। মেয়ের জন্য কিনেছিলেন স্বর্ণালংকার। বাড়িতে চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি। এর মধ্যে গতকাল শনিবার দুপুরে বাড়ির রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরে। মুহূর্তের মধ্যে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
আগুনে শিখায় বাড়ির সব শয়নকক্ষে থাকা আসবাব ও মেয়ের বিয়ের জন্য গচ্ছিত ঢাকা পুড়ে ছাই হয়। খোয়া যায় স্বর্ণালংকারও। এখন মেয়ের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা কীভাবে সারবেন তা নিয়ে দিশাহারা এই বাবা।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় ব্যবসায়ী রতন সাহার বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। পরে বাড়ির তিনটি শয়নকক্ষ, একটি ঠাকুরঘর এবং বাড়ির বারান্দায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিরামপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। পরে বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সেখানে টানা এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আগুন নেভাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সজল হোসেন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।